চাঁদপুর, সোমবার ১৭ জুন ২০১৯, ৩ আষাঢ় ১৪২৬, ১৩ শাওয়াল ১৪৪০
jibon dip

সর্বশেষ খবর :

  • -
চাঁদপুর বিতর্ক আন্দোলনে একটি মাইলফলক
রাজন চন্দ্র দে
১৭ জুন, ২০১৯ ০৩:০৬:২৬
প্রিন্টঅ-অ+




চাঁদপুরের বিতর্ক আন্দোলন যেভাবে চলছে হয়তো আর বেশি দিন বাকি নেই বিতর্কের জেলা হিসেবে বা বিতার্কিক তৈরির জেলা হিসেবে সারা বাংলাদেশের মানুষ চাঁদপুরকে চিনবে। আমার মনে হয়, সারা বাংলাদেশের মধ্যে চাঁদপুরই বিতর্কে একটি সমৃদ্ধ জেলা। আর এটি সম্ভব হয়েছে একমাত্র চাঁদপুর কণ্ঠের মাধ্যমে। ২০০৯ সালে যদি চাঁদপুর কণ্ঠ এভাবে এগিয়ে না আসতো তাহলে হয়তো চাঁদপুরের বিতর্ক আন্দোলন এতোটা জোরদার হতো না। পাশাপাশি চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে সাথে এগিয়ে এসেছে দেশের খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিঃ। চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাত এবং পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় কামরুল হাসান শায়ক এগিয়ে এসেছেন বলেই এই এগার বছর যাবৎ চাঁদপুর থেকে শত শত বিতার্কিক সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি দেশসেরা বিতার্কিক হয়েছে এই চাঁদপুর থেকে। যা সম্ভব হয়েছে পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে। আর এ বছর হলো প্রতিযোগিতার একাদশ বছর। আগামী বছর পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার একযুগ পূর্তি হবে।

কেন আমরা বার বার সনাতনী বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করি : একজন বিতার্কিকের বিতর্কে হাতেখড়ি হয় সনাতনী বিতর্ক দিয়ে। আসলে সনাতনী বিতর্ক শিক্ষার্থীদের কাছে, শ্রোতাদের কাছে এবং বিতার্কিকদের কাছে সহজবোধ্য মনে হয়। আমরা মনে করি, মফস্বল শহরগুলোতে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত হয়েছে সনাতনী বিতর্ক। আমি দেখেছি বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে, জাতীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খুবই নিরবচ্ছিন্নভাবে চর্চা হয়ে আসছে এই বিতর্ক শিল্পের সনাতনী ধারা। বিতর্কের বিভিন্ন ফরমেটের মধ্যে সনাতনী ধারাটি একটি সহজবোধ্য মাধ্যম। একজন শিক্ষার্থী যখন বিতর্ক শেখার আগ্রহ বা ইচ্ছা পোষণ করে তখনই তাঁকে সনাতনী ধারা সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হয়।  সনাতনী বিতর্কে প্রথমেই সূত্রপাত ঘটে একটি বিষয়ের যুক্তিগত প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে, যা শিক্ষার্থীদের বুঝতে খুবই সহজ হয়। একজন শিক্ষার্থীর যখন বিতর্ক করার আগ্রহ সৃষ্টি হয় তখনই সে জানতে চায় বিতর্ক কী, এটা কীভাবে করে, পক্ষ দল কী, বিপক্ষ দল কী, কত মিনিট দেয়া হয়, কতজন বক্তা থাকে, যুক্তি খ-ন কী, তত্ত্ব কী, তথ্য কী, উপস্থাপনা কীভাবে করে। তবে বর্তমানে সংসদীয় ধারার বিতর্কও খুবই জমজমাট। মফস্বল এলাকাগুলোতে সংসদীয় ধারা কম পরিলক্ষিত হলেও বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা জাতীয় কোনো প্রতিযোগিতায় সংসদীয় ধারার বিতর্ক খুবই জমজমাট। তারা এখন সনাতনী ধারার চেয়ে সংসদীয় ধারায় বিতর্ক করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাই চাঁদপুরে বিতর্কের পথিকৃৎ, শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাত এবারের আসরের সেমি-ফাইনাল পর্বে ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছর অর্থাৎ পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার এক যুগপূর্তিতে কমপক্ষে ৮টি বিতর্ক দল নিয়ে হলেও সংসদীয় ধারায় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো।

এ বছর থেকে আমরা ইংরেজি ধারার বিতর্ক চালু করতে পেরেছি। আমার দেখায় ইংরেজি মাধ্যমেও চাঁদপুরের বিতার্কিকরা বেশ ভালো বিতর্ক করে। আমার জানামতে, চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় সর্বপ্রথম সর্বোচ্চ সংখ্যক দল নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সনাতনী ধারায় বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

বিতর্কের পাঠশালা : বিতর্ক শিক্ষা যেহেতু জ্ঞানার্জনের একটি উৎকৃষ্ট মাধ্যম সেহেতু চাঁদপুরের তেমনি একটি পাঠশালার বর্ণনা দিচ্ছি। চাঁদপুরের একটি খ্যাতনামা শিশু বিদ্যালয় হলো রেলওয়ে কিন্ডারগার্টেন। যেটি পালবাজারের উত্তর দিকে বকুলতলা রোডে অবস্থিত। আমরা বিগত বছর অর্থাৎ দশম পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম বারের মতো আয়োজন করেছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিতর্ক প্রতিযোগিতা। প্রথমবারের মতো এই স্কুলটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চাঁদপুরের বিতর্ক অঙ্গনকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। তারা চাঁদপুরের নামকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে হারিয়ে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয় এবং রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। সেই স্কুলটির অধ্যক্ষ হলেন বিশিষ্ট নারী নেত্রী, চাঁদপুরে সেন্ট্রাল ইনার হুইল ক্লাবের সাবেক সভাপতি, একজন সফল সংগঠক মাহমুদা খানম। আমি দেখেছি এবছরও বিতর্কের যখন বিষয় দেয়া হয় তখন স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি তাঁর স্কুলের সকল শিক্ষক ও বিতার্কিকদের নিয়ে একত্রে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বিতর্কের আগের দিন তিনি তাঁর স্কুলের সকল শিক্ষক ও বিতার্কিকদের নিয়ে তাঁর বাসায় ছোট খাট একটি পাঠশালা তৈরি করেন। ৩-৪ ঘণ্টাব্যাপী তিনি এই পাঠশালায় বিতার্কিকদের প্রস্তুতি নিয়ে নিমগ্ন থাকেন। তখন পাঠশালার পরিবেশ উৎসাহ উদ্দীপনায় ভরে উঠে। বিতর্কের প্রতি ভালোবাসা যে কতটুকু তা এই পাঠশালা দেখলেই বুঝা যায়। আমার মনে হয়, রেলওয়ে কিন্ডারগার্টেনের মতো বিভিন্ন স্কুল-কলেজেও বিতর্ক চলাকালীন এ ধরনের পাঠশালা গড়ে উঠে। আর সেখানেই আমাদের আয়োজনের সার্থকতা।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় দর্শক-শ্রোতাদের মনোরঞ্জন : প্রতিটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা খুবই সুশৃঙ্খলভাবে বিতার্কিকদের বক্তব্য শ্রবণ করে থাকে। ফাইনাল পর্বে দর্শক-শ্রোতাদের মনোরঞ্জনের জন্য আমরা ফাইনালে উত্তীর্ণ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের উপর একটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শন করে থাকি। উপস্থিত দর্শক-শ্রোতা বিশেষ করে ফাইনাল পর্বে বিতার্কিকদের বক্তব্য খুবই মনোযোগ সহকারে শোনে এবং হাততালির মাধ্যমে তাদের শুভেচ্ছা জানান। শুধু বিতর্ক নয়, যে কোনো প্রতিযোগিতায় দর্শক হলো প্রতিযোগিতার প্রাণ। বিতর্ক মানুষের মনে এতোটা সাড়া জাগিয়েছে যে, প্রতিযোগিতা চলাকালীন বসার জন্যে স্থানের সংকুলান না থাকলেও দাঁড়িয়ে হলেও পুরো প্রতিযোগিতা খুবই শৃঙ্খলভাবে দর্শক-শ্রোতারা শ্রবণ করে। তাই সিকেডিএফ-এর পক্ষ থেকে সকল দর্শক শ্রোতাকে ধন্যবাদ জানাই।

একাদশ পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আমার দেখায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ইংরেজি বিতর্ক। আমার জানামতে, চাঁদপুরে এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইংরেজি বিতর্ক চালু হয়েছে। ইংরেজি বিতর্কেও চাঁদপুরের বিতার্কিকরা এতোটা ভালো তা আমার আগে জানা ছিল না। এমনকি, আমি কখনো চাঁদপুরে ইংরেজি মাধ্যমে বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে দেখিনি। ৮টি বিতর্ক দল নিয়ে ইংরেজি ধারায় এই প্রথম বারের মতো শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাত এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সময়োপযোগী একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইংরেজিতে বিতার্কিকরা যখন বক্তব্য রাখে তখন তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। অনর্গল তারা বিষয়ের পক্ষে বিপক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করে। তাদের ভাষাশৈলীও খুবই চমৎকার। এছাড়াও বিতর্ক শুরুর পূর্বে যখন তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয় তখন খুবই সুন্দরভাবে তারা প্রশ্নোগুলোর জবাব দিয়ে থাকেন। তাই আমার দেখায় এবারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব হলো ইংরেজি ধারার বিতর্ক।  

উৎসাহ উদ্দীপনা : বিতর্ক প্রতিযোগিতা নিয়ে বিতার্কিক, শিক্ষক-অভিভাবক ও দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে এমনকি আয়োজকদের মধ্যে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি বিতর্ক শুরুর পূর্বে বিতার্কিকরা কোনো চাপ না নিয়ে খুবই হাস্যোজ্জ্বলভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। বিশেষ করে যে দলগুলো বিজয়ী হয় সে দলগুলোর বিতার্কিকরা তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় মেতে উঠে। বেশিরভাগ সময়ে বিজয়ী হওয়ার কারণে তারা এতোটাই উৎফুল্ল হয় যে, তারা আনন্দে কান্না করে ফেলে। পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল পর্বে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা দেয়া যায়। খুবই জাঁকজমকভাবে সাজানো হয় ভেন্যুটি। ফাইনালের মঞ্চ থাকে সুসজ্জিত। ফাইনালে উত্তীর্ণ দলগুলো তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে স্কাউট বাদক দল নিয়ে এসে আনন্দে মেতে উঠে। যদি চাঁদপুর শহরের বাইর থেকে কোনো দল ফাইনালে উঠে তাহলেতো কোনো কথা নেই। তারা গাড়ির বহর নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

বিতর্কের নানান দিক : সনাতনী, বারোয়ারী, সংসদীয়, জাতিসংঘ মডেল, টি-ফরমেট, প্ল্যানচ্যাট, রম্য, আঞ্চলিক, জুটি, ইংরেজি মাধ্যম, পার্লামেন্টারী ফরমেট ও ওয়ার্ল্ড ফরমেট বিতর্ক। এ ধরনের ফরমেটের বাইরেও আরও ফরমেটে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু আমরা মূলত ২০০৯ সাল থেকে সনাতনী ধারার উপর প্রতিযোগিতা আয়োজন করে চলেছি মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে। পরবর্তীতে সংযোজন করেছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সনাতনী ধারার ওপর বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এ বছর আমরা আরেকটি অর্থাৎ ইংরেজি মাধ্যমে বিতর্ক প্রতিযোগিতা চালু করেছি। সিকেডিএফ-এর সভাপতি শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাত এবারের আয়োজনে সেমি-ফাইনাল পর্বে ঘোষণা দিয়েছেন আগামী বছর এ প্রতিযোগিতার এক যুগপূর্তি উপলক্ষে সংসদীয় ধারাও সংযোজন করবেন। ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাতের প্রতি। আমরা আশা করছি পর্যায়ক্রমে আরও কিছু ধারা প্রতিযোগিতায় সংযোজন করবো। তবে এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।

একটি স্বপ্নের সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিতার্কিকদের ভূমিকা : একটি স্বপ্নের সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের যেমন ভূমিকা রয়েছে তেমনি রয়েছে একেকজন তরুণ বিতার্কিকেরও। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল একটি সবুজ ও সোনার বাংলাদেশের। আর জাতির জনকের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বিতার্কিকরা। একেকজন বিতার্কিক যেভাবে তাদের যুক্তি উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখে, যেভাবে তারা তথ্য সমৃদ্ধ বক্তব্য রাখে, তখনই মনে হয় জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে এই বিতার্কিকরাই। একেকজন বিতার্কিক ও একেকজন তরুণ স্বপ্ন দেখে কিভাবে এদেশটাকে আরও সুন্দর করা যায়, কিভাবে এদেশ থেকে দুর্নীতি নামক শব্দটি মুছে ফেলা যায়, কিভাবে এদেশটাকে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করা যায়। আর সব কিছুই সম্ভব হবে এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজনের ফলে। তাই একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিতার্কিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এবারে আসা যাক একাদশ পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন নিয়ে : এ বছর আমরা ১৫০টি দল নিয়ে শুরু করেছি প্রতিযোগিতা। ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ আমরা একযুগে প্রত্যেক উপজেলায় বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। পরবর্তীতে ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এবারের আয়োজনের শুভ সূচনা হয়। ২৭ জানুয়ারি হাইমচর, ২৯ জানুয়ারি ফরিদগঞ্জ, ০৯ ফেব্রুয়ারি মতলব উত্তর, ১১ ফেব্রুয়ারি শাহ্রাস্তি, ১৬ ফেব্রুয়ারি কচুয়া, ২৩ ফেব্রুয়ারি হাজীগঞ্জ এবং ০২ ও ০৩ মার্চ চাঁদপুর সদরে প্রান্তিক পর্ব শেষ হয়। তারপর পর্যায়ক্রমে অভিযাত্রা, অগ্রযাত্রা, জয়যাত্রা ও জয়ধ্বনি শেষ করে আজ উল্লাস পর্ব। এই প্রথমবারের মতো প্রাথমিক ও কলেজ পর্যায়ে উপজেলাভিত্তিক চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ ঘোষণা হয়। মাধ্যমিক পর্যায়েও ১ম সেরা ও ২য় সেরা ঘোষণা করা হয় এবং তাদেরকে ক্রেস্ট, বই ও সনদপত্র দেওয়া হয়। একদিনে একটি বিতর্ক দলকে ২ বার বিতর্ক করতে হয়েছে। এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকরাও সেক্ষেত্রে ২টি বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছে। যা তাদের জন্যে একটু কষ্টসাধ্যও মনে হচ্ছিল। তারপরও তারা খুবই উৎসাহ বোধ করেছে।

এবারের আয়োজনে সিকেডিএফ উপজেলা কমিটিগুলোর ভূমিকা : এবারের প্রতিযোগিতা আয়োজনের পূর্বে প্রতিটি উপজেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিটি উপজেলায় প্রতিযোগিতা চলাকালীন ও আগে-পরে উপজেলা কমিটিগুলো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আমার দেখায় সেক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে শাহ্রাস্তি উপজেলা। সবচেয়ে আশার ব্যাপার হলো, প্রতিযোগিতার দিন তাদের কমিটির প্রায় সকল সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। সভাপতি অধ্যাপক কবিরুল ইসলাম স্যার পুরো সময় ধরে উপস্থিত ছিলেন এবং প্রতিটি দলকে উপস্থিত করার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। এমনকি তারা প্রতিযোগিতার কয়েকদিন পূর্বে বিতার্কিকদের জন্য একটি কর্মশালারও আয়োজন করে। পাশাপাশি এবারের প্রতিযোগিতায় প্রতিটি উপজেলার সিকেডিএফ কমিটি খুবই সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে। যার ফলে আমাদের প্রতিটি আয়োজনই ছিল খুবই সুশৃঙ্খল এবং আনন্দদায়ক। উপজেলাভিত্তিক প্রান্তিক পর্বগুলোতে প্রত্যেক উপজেলায় আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধেয় কাজী শাহাদাত স্যার, চাঁদপুরে বিতর্কের আইকন, বাংলাদেশে প্রথম বিতর্ক একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা, চাঁদপুরে বিতার্কিক গড়ার কারিগর জনাব কাজী শাহাদাত উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিনি প্রতিনিয়ত দিক নির্দেশনা দিয়ে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন এবং আমাদের পদযাত্রাকে আরও সহজ করেছেন। প্রান্তিক পর্ব শেষে তিনি প্রতিটি পর্বে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এছাড়াও চাঁদপুরে বিতর্কের গুরু আমরা যাকে বলে থাকি, যিনি একজন সাবেক বিতার্কিক, বিতর্কের উপর ৩টি (বিতর্ক বীক্ষণ, বিতর্ক বিধান ও বিতর্ক সামগ্র) বইয়ের প্রণেতা, চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমির অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট চিকিৎসক, যিনি পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রতিটি বছর প্রতিটি পর্বে যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সেই বিষয়গুলো দিয়ে থাকেন, তিনি হলেন ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া। তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে বিচারক থেকে এবং সভাপ্রধান থেকে সহযোগিতা করে থাকেন। তাদের দুজনকেই সিকেডিএফ-এর পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের আয়োজনের অন্যতম টাইটেল স্পন্সর দেশের খ্যাতনামা পুস্তক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সকে এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অত্যন্ত সজ্জন একজন ব্যক্তিত্ব কামরুল হাসান শায়ককে। চাঁদপুরে বিতর্ক আন্দোলনে তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে হয়তো আমরা এভাবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারতাম না। আমরা আশা করছি চাঁদপুরের বিতর্ক আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখতে হলে তার এই পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকবে।

বিশেষ করে কৃতজ্ঞতা জানাই তাঁর প্রতি, যিনি বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান বিতার্কিক ছিলেন, বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আলহাজ্ব ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়। যাঁর বিতর্কের কিছু মুহূর্ত আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি। যিনি একজন কৃতী বিতার্কিক হয়ে চাঁদপুরের বিতর্ক আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্যে এবং নতুন নতুন বিতার্কিক সৃষ্টির জন্যে বিগত কয়েক বছর যাবৎ আমাদের এ আয়োজনে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আমরা সিকেডিএফ-এর পক্ষ থেকে আবারও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। তিনি এ বছর থেকে বিতর্কে প্রণোদনা বৃত্তি চালু করেছেন। এছাড়াও বিগত কয়েক বছর যাবৎ শুধু চাঁদপুরে নয় আমার মনে হয় সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম বিতর্কে বৃত্তি প্রচলন করেছেন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব মনজুর আহমেদ, তাঁকেও সিকেডিএফ-এর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।

সর্বশেষ যে ব্যক্তিটিকে ধন্যবাদ জানাবো তিনি হলেন চাঁদপুরের বিতর্ক আন্দোলনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক আলহাজ্ব অ্যাড. ইকবাল বিন বাশারকে। তিনি বলেছেন যতদিন চাঁদপুর কণ্ঠ থাকবে ততদিন চাঁদপুরে বিতর্ক আন্দোলন চলবে চলবে চলবে ইনশাল্লাহ। মহান সৃষ্টিকর্তা তাকে দীর্ঘায়ু দান করুন। চাঁদপুরের বিতর্ক আন্দোলনে তাঁর পদযাত্রা অব্যাহত থাকুক এই প্রত্যাশা করছি।

আমাদের আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কলাকুশলী, অংশগ্রহণকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সময়ে যারা আমাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে সিকেডিএফ-এর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই এবং চাঁদপুরে বিতর্কের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক এই প্রত্যাশা করছি। বিতর্কের জয় হোক।

লেখক : রাজন চন্দ্র দে, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সিকেডিএফ, চাঁদপুর।


হেরার আলো
বাণী চিরন্তন
আল-হাদিস

২-সূরা বাকারা


২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী


পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।


৭৯। সুতরাং দুর্ভোগ তাহাদের জন্য যাহারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে, 'ইহা আল্লাহর নিকট হইতে।' তাহাদের হাত যাহা রচনা করিয়াছে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের এবং যাহা তাহারা উপার্জন করে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের।


 


 


 


assets/data_files/web

আত্মার সৌন্দর্য মানুষকে পরিপূর্ণতা দান করে। _টমাস ফুলার।


 


 


যে ব্যক্তি প্রথম সালাম দেয়, সে অহঙ্কার মুক্ত।


 


 


ফটো গ্যালারি
করোনা পরিস্থিতি
বাংলাদেশ বিশ্ব
আক্রান্ত ৭,৫১,৬৫৯ ১৬,৮০,১৩,৪১৫
সুস্থ ৭,৩২,৮১০ ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮
মৃত্যু ১২,৪৪১ ৩৪,৮৮,২৩৭
দেশ ২০০ ২১৩
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
আজকের পাঠকসংখ্যা
২৯১২৯১৫৭
পুরোন সংখ্যা