প্রতিযোগিতাসঙ্কুল পৃথিবীতে টিকে থাকাটা যেমন কাক্সিক্ষত তেমনি অনেকের মধ্যে এক না হয়ে অনন্যরূপে নিজেকে তুলে ধরাটাও অতীব জরুরি। নিজেকে লক্ষ্য প্রাণের প্রবাহের মধ্যে বিশেষ করে তুলতে হলে চাই বিশেষ বিদ্যার পরিচর্যা। নিজের পদচ্ছায়া আলাদা করে না প্রকাশ করতে পারলে বিপুলের কাছে ব্যক্তির যেমন কোনো আবেদন থাকে না, তেমনি অনেকের কাছেও অজ্ঞাত রয়ে যায় অলক্ষ্যে, অবহেলায়। আজকের পৃথিবীতে অন্যের দৃষ্টি নিজগুণে কেড়ে নেওয়াটাই মূলকথা, কেউ এগিয়ে এসে যেচে কাউকে বর করে তুলবে না। কেননা, আজকের পৃথিবী নির্মম প্রতিযোগিতার পৃথিবী, আজকের পৃথিবী অতিমাত্রায় প্রতিস্থাপনের পৃথিবী। সময়ের এই নির্দয় যাত্রায় ব্যক্তির স্বতন্ত্র গুণাবলিই তাকে সামনে নিয়ে আসে লক্ষ্য-কোটি জনতার ভিড় থেকে। নিজেকে স্বতন্ত্র করে তুলে ধরার জন্যে বিতর্ক হচ্ছে একটি অতুলনীয় ও নির্ভরযোগ্য শিল্প যার পরিচর্যায় ব্যক্তি তার বচনে ও বাচনভঙ্গিতে, জ্ঞানে ও মুক্তবুদ্ধিতে হয়ে উঠে অপ্রতিরোধ্য এবং অভিনন্দনীয়।
ভাষার প্রমিত ব্যবহার, উচ্চারণের মানমতো প্রয়োগ একজন তুচ্ছ ব্যক্তিকেও মনে রাখিয়ে দেয়, মনোযোগ পাইয়ে দেয় অন্যের কাছে। আজকের বিশ্ব তলোয়ার-বন্দুকের বিশ্ব নয়। আজকের পৃথিবীতে যুক্তিই হচ্ছে অপ্রতিরোধ্য শক্তিমান হাতিয়ার। যুক্তির জোরে জয় করা যায় অপ্রত্যাশিত শক্তিকেও। যুক্তির জোর মনে সদাই ইতিবাচক সামর্থ্য তৈরি করে দেয়। তাই ব্যক্তিকে টিকে থাকলে হলে নান্দনিক পন্থায় যুক্তিকে লালন ও পরিচালন করা জরুরি। বিতর্ক শিল্প ব্যক্তিকে সর্বদা যুক্তির বলে বলীয়ান রাখে। বুদ্ধির মুক্তি যে জাতি ঘটাতে পারেনি সে জাতির পতন অনিবার্য। পৃথিবীর ইতিহাসে যুক্তির বলে বলীয়ানরাই টিকে গেছে মানুষের মনে ও কল্পনায়।
বিতর্কে যে যুক্তির উচ্ছ্বাস তা অবশ্যই ইতিবাচক উচ্ছ্বাস। যে যুক্তির যথাব্যবহার জানে, যে যুক্তিকে হাতিয়ারে পরিণত করে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে পারে জীবন তার গলায় দেয় বরমাল্য। কেবল সুভাষায় নিজের যুক্তি প্রদর্শন ও বিতর্কমঞ্চে বিজয়ী হওয়াটাই বিতর্ক শিল্পের মূল লক্ষ্য নয়। বিতর্ক শিল্পের মাধ্যমে পরমত সহিষ্ণুতার চর্চা গড়ে তোলা এবং অন্যকে নিজের মত মেনে নিতে উদ্বুদ্ধ করাটাই মূল লক্ষ্য। দেশ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা, ঘটমান বিষয়ের সু ও কু দিকসমূহ নিয়ে আপন মনে চিন্তারাজ্য গড়ে তুলতে প্রভাবিত করাটাই বিতর্ক চর্চার মৌলিক উদ্দেশ্য।
আজকের বিতার্কিক আগামীদিনের একজন কার্যকর সমাজপতি, ক্যারিশম্যাটিক কর্ণধার।তার জানার জগতের পরিধি ব্যাপক বিস্তৃত থাকবে। তার যুক্তির জোর মূলত প্রচলিত ধারণায় কুঠারাঘাতের জন্যে। গড্ডালিকা প্রবাহ একজন বিতার্কিকের উদ্দিষ্ট নয়। একজন বিতার্কিক অপ্রচলিতকে প্রচল করেন, অগ্রাহ্যকে গ্রহণযোগ্য করে তোলেন তার জ্ঞান চর্চাকে শিল্পের পর্যায়ে উন্নীত করেন। কাজেই যারা বিতার্কিক তাদের হারানোর কিছুই নেই। যারা বিতার্কিক তাদের ভয়েরও কিছু নেই। বিতার্কিকের হাহাকার থাকে না, থাকে না অপ্রাপ্তি বলে কিছু। বিতার্কিকের শাণিত মেধার কাছে সকল অপ্রাপ্তি দূর হয়ে যায়, সকল আঁধার যুক্তির প্রজ্ঞায় হয়ে যায় অরুণিমা-রাঙা ফর্সা।
দীর্ঘদিন নিজেকে বিতর্ক-শিল্প সংশ্লিষ্ট রাখলে সহজে হতাশা গ্রাস করতে পারে না। যে বিতার্কিকরা আজ মাতাবে উল্লাসে তারাও কোনো না কোনো পর্যায়ে হোঁচট খেতে হয়েছিল।কিন্তু তাদের সেই হতাশা বিতর্কবলের কাছে উবে গিয়ে পরিণত হয়েছে উদ্যমে। তাইতো আজ তাদের হাতে মেওয়া এনে দিয়েছে সময় উল্লাসের আবরণে।
বিতর্ক যুক্তির মঞ্চে বিরোধিতা শেখালেও জীবনে তা শেখায় মৈত্রীর মাধুর্য। পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের বিতার্কিকদের মধ্যে তৈরি করেছে সৌহার্দ্যরে মেলবন্ধন। প্রতিযোগিতা এখানে নিজেকে শাণিত করার ক্ষেত্র, বিতর্ক এখানে সম্প্রীতি ও ঐক্যতানের সুর, যুক্তি এখানে আত্ম বিনির্মাণের উপকরণ। তৃণমূলের অস্বচ্ছলতা পীড়িত শিক্ষার্থীর কাছেও যুক্তির বিনোদনই বড় সম্পদ। তারা স্বপ্ন দেখে, কোনো একদিন অসংখ্য ডাঃ দীপু মনি জন্ম নেবে এইসব বিতার্কিক নক্ষত্র-ম-ল হতে।
ইলিশের বাড়িতে ইলিশ নয়, এমন একদিন আসবে যেদিন পর্যটক ও মানুষ আসবে বিতর্ক শিল্পের টানে। একটি প্রতিযোগিতা টানা একাদশ বর্ষ পেরিয়ে যুগের দুয়ারে উপনীত, এটা কম গৌরবের নয়। এই গৌরব একদিন শতবর্ষকে ছাপিয়ে যাবে এই হোক আজকের আন্তরিক কামনা। বিতর্কের জয় হোক।
ফজর | ৪:৩৪ |
যোহর | ১২:০৩ |
আসর | ৪:৩০ |
মাগরিব | ৬:১৮ |
এশা | ৭:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২-সূরা বাকারা ২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। ৭৯। সুতরাং দুর্ভোগ তাহাদের জন্য যাহারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে, 'ইহা আল্লাহর নিকট হইতে।' তাহাদের হাত যাহা রচনা করিয়াছে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের এবং যাহা তাহারা উপার্জন করে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের।
assets/data_files/web
আত্মার সৌন্দর্য মানুষকে পরিপূর্ণতা দান করে। _টমাস ফুলার।
যে ব্যক্তি প্রথম সালাম দেয়, সে অহঙ্কার মুক্ত।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |