ঊনিশ শ আশি সালের মাঝামাঝি থেকে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বিতর্ক সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর এবং অনেক পরে চিফ মডারেটরের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখেছি, বিতর্কের চর্চা তরুণদের শুধু যুক্তিমনস্ক এবং নিয়মনিষ্ঠই করে না, তাদের জিজ্ঞাসার পরিধি বাড়ায়, তাদের মধ্যে জানার আগ্রহ তৈরি করে। দীর্ঘ পঁচিশ বছর আমি এই সংগঠনটির সঙ্গে থেকে নিজেও অনেক উপকৃত হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি যুক্তিই অনেক তর্কের, দ্বন্দ্বের এবং সংঘাতের মীমাংসা করতে পারে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাস করি, যার জš§ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এবং যার অস্তিত্ব নিশ্চিত করে দিয়ে গেছেন ত্রিশ লক্ষ শহিদ। অথচ আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলির আচরণ গণতান্ত্রিক নয়, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলি গণতন্ত্রের মূল্যবোধ তাদের কাজে কর্মে প্রতিফলিত করে না, আমাদের সমাজে এবং ব্যক্তিজীবনেও গণতন্ত্রের আদর্শগুলি চর্চিত হয় না। এর কারণ আমরা পরমতকে শ্রদ্ধা করি না, আমরা গায়ের জোরে আমাদের মত প্রতিষ্ঠা করতে চাই, এবং আমরা যুক্তির ধার ধারি না। অথচ একটুখানি ভাবলে আমরা দেখতে পাব, জগৎ-সংসার যেমন চলে নিয়মের অধীনে, উন্নত সমাজগুলোও চলে যুক্তির পথে। আমাদের বিতার্কিকদের আমি এই কথাগুলি বলেছি, এখনও বলি, এবং তারা যখন বিতর্কের বাইরে জীবনেও যুক্তির চর্চা করে, তারা উপকৃত হয়। তাদের জীবন উন্নত হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনে আমি ছয় বছর ইংরেজি বিতর্কের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছি। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের এই বিতর্ক অনেক মেধাবী বিতার্কিক তৈরি করেছে, যারা বিদেশেও বাংলাদেশের হয়ে সুনাম কুড়িয়েছে।
এ রকম এক বিতর্ক অনুষ্ঠানের আগে একটি স্কুলের এক ছাত্রকে আমার কাছে নিয়ে এলেন তার মা এবং বললেন, ছেলেটি অকারণে রাগ দেখায়, কারও কথা শোনে না। আমি ছেলেটির সাথে কথা বলে বুঝলাম, তার রাগের প্রকৃত কারণ আছে। তারপরও আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, বিতর্কে রাগ দেখালে সে জিতবে কি না। সে বলল, না। আমি আবার তাকে জিজ্ঞেস করলাম, সে জীবনে জয়ী হতে চায় কি না। সে মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি বললাম, তাহলে যুক্তিকে সঙ্গী করো। রাগকে নয়। রাগ, হিংসা, মিথ্যা, আবেগ মানুষকে পরাজিত করে। ছেলেটি মন দিয়ে শুনল। কয়েক বছর পর তার মার সঙ্গে আবার দেখা হলো। তিনি হেসে বললেন, তার ছেলে বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় পড়তে গেছে।
যুক্তিতে বিশ্বাস রাখলে এদেশের তরুণরা শুধু নিজেরা সফল হবে তাই নয়, বাংলাদেশকেও সকল ক্ষেত্রে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যেতে পারবে।
এজন্য চাই সারা দেশে যুক্তির চর্চা। এটি সম্ভব করতে পারে উন্নত বিতর্ক চর্চা। আমি আনন্দিত, দেশের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স-এর সহযোগিতায় চাঁদপুরে এ কাজটি এক দশকের বেশি সময় ধরে করছে চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতা’ এখন বাংলাদেশের বিতর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি আরও আনন্দিত যে, এই একযুগের বেশি সময়ে যেসব বিতার্কিক এই প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে, তারা একটি সুন্দর সমাজ নির্মাণে অবদান রেখে চলেছে।
আমি চাঁদপুর কণ্ঠ এবং পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-কে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন-কেও ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা একটি সুন্দর উদ্যোগে যুক্ত হয়ে একটি যুক্তিনিষ্ঠ জাতি গঠনে তাদের ভূমিকাটি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করছে।
আমি আশা করি এই উদ্যোগটি আগামীতেও চালু থাকবে এবং আরও গতি লাভ করবে। সকল বিতার্কিককে আমার ভালোবাসা ও প্রীতি জানাই। Ñসৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কথা সাহিত্যিক ও সাহিত্য সমালোচক, জন্ম : ১৮ জানুয়ারি ১৯৫১ সালে সিলেট শহরে। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আমিরুল ইসলাম এবং মাতা রাবেয়া খাতুন। তিনি সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে মাধ্যমিক পাস করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সিলেট এমসি কলেজ থেকে ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে। ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইয়েটস-এর কবিতায় ইমানুয়েল সুইডেনবার্গের দর্শনের প্রভাব বিষয়ে পিএইচডি করেন। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৯৬, প্রথম আলো বর্ষসেরা বই পুরস্কার ২০০৫, কাগজ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬ পেয়েছেন। তিনি গল্পগ্রন্থ, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও গবেষণাগ্রন্থের উপর বেশ কিছু বই রচনা করেন। তিনি পেশাগত জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে যোগ দেন। (তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া)
ফজর | ৪:৩৪ |
যোহর | ১২:০৩ |
আসর | ৪:৩০ |
মাগরিব | ৬:১৮ |
এশা | ৭:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২-সূরা বাকারা ২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। ৭৯। সুতরাং দুর্ভোগ তাহাদের জন্য যাহারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে, 'ইহা আল্লাহর নিকট হইতে।' তাহাদের হাত যাহা রচনা করিয়াছে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের এবং যাহা তাহারা উপার্জন করে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের।
assets/data_files/web
আত্মার সৌন্দর্য মানুষকে পরিপূর্ণতা দান করে। _টমাস ফুলার।
যে ব্যক্তি প্রথম সালাম দেয়, সে অহঙ্কার মুক্ত।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |