আল্লাহ-রাব্বুল আলামীন সাত আসমান যমীন এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের উপকারের জন্য, আর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁরই ইবাদতের জন্য। পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ স্থল। স্থলভাগে যেমন রয়েছে অসংখ্য প্রাণী ও গাছ-গাছড়া,তেমনি পানিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মাছ ও অন্যান্য প্রাণী। মাছকে আল্লাহ পাক মানুষের খাদ্য হিসেবে তৈরি করেছেন। এ সম্বন্ধে কালামে পাকে উল্লেখ রয়েছে ঃ "দুটি দরিয়া এক রকম নয়, একটির পানি সুমিষ্ট ও অপরটির পানি লোনা, প্রত্যেকটি থেকে মাছ আহরণ কর।" সূরা ফাতির ঃ ১২
হাদীসেও মাছের মধ্যে কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম তার নির্দেশ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত হাদীসটি প্রণিধানযোগ্য ঃ "আমর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি জাবির (রা.) কে বলতে শুনেছেন, আমরা জাইশুল-খাবতের যুদ্ধে ছিলাম। আমদের আমীর (সেনাপতি) ছিলেন আবু উবায়ইদা (রা.)। আমরা ভীষণ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম। সমুদ্র একটি তিমি জাতীয় মাছ (তীরে) নিক্ষেপ করলো। এ ধরনের মাছ আমরা (ইতিপূর্বে) দেখিনি। এ (জাতীয় তিমি-কে) আম্বর বলা হয়। আমরা পনের দিন ধরে মাছটি খেলাম। এরপর আমরা মদীনায় ফিরে এসে নবী (সাঃ) এর কাছে এ কথা বললাম। তিনি বললেনঃ আহার কর, রিযিক, এটা আল্লাহ পাঠিয়েছেন। (আর) তোমাদের সাথে যদি এর কিছু (অংশ) থাকে তা হলে আমাদেরকেও এর স্বাদ গ্রহণ করতে দাও। তাদের কেউ তার কিছুটা এনে দিলে তিনি তা খেলেন।" বুখারী,৪খ,হাদীসঃ ৪০১৬
মাছ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ আল্লাহ এ দুনিয়াতে সৃষ্টি করেছেন। তাই এ সম্পদের উন্নয়ন করে আল্লাহর বান্দার রিযিক উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মাছ চাষে অংশগ্রহণ করা উচিত। আল্লাহ বলেনঃ
"আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি স্থলে ও সমুদ্রে। তাদের চলাচলের জন্য পরিবহন দিয়েছি এবং তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছি এবং আমি যা সৃষ্টি করেছি, তাদের অনেকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।" সূরা বণী ইসরাইল ঃ ৭০
সমুদ্র বা জলভাগের ওপর দিয়ে শুধুমাত্র চলাচলের জন্যেই জলভাগ সৃষ্টি করা হয়নি। তা থেকে মাছ আহরণের তাগিদও আল্লাহ দিয়েছে।
পনি সম্পদ থেকে মাছ সংগ্রহে আল্লাহর নির্দেশ পালন করা হলে অবশ্যই মানুষের জীবন সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হবে। সমুদ্র থেকে মাছ সংগ্রহের মাধ্যমে মানুষের কাজ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, তা নয়। নদীনালা, খাল-বিল, পুকুর-দীঘি সব কিছু থেকে মাছ আহরণ করতে হবে। আর তা করতে হলে মাছের চাষ করতে হবে।
যে পানি সম্পদ মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে এবং যাকে মানুষের অধীন করা হয়েছে, তার ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব অর্জন করে মৎস্য সম্পদের সর্বাত্মক উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা পৃথিবীর জলভাগকে মানুষের অধীন করেছেন কিন্তু তা থেকে পূর্ণ ফায়দা আমরা নিতে পারছি না এবং সমুদ্র থেকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়ে আমরা ভীত। প্রকৃতপক্ষে গবেষণা করে সমুদ্রের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব অর্জন করতে হবে এবং তা থেকে তাজা মাছ সংগ্রহ করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা আল কুরআনে ঘোষণা করেছেনঃ
"তিনি সমুদ্রকে অধীন করেছেন যাতে তোমরা তা থেকে তাজা মাছ আহার করতে পার, আর যা থেকে আহরণ করতে পার মণি-মুক্তা, যা তোমরা অলংকার হিসেবে ব্যবহার করবে। সূরা নাহলঃ ১৪
এ ছাড়াও ইসলামে আল্লাহর সৃষ্ট মানুষকে সেবা করার কথা বলা হয়েছে, যা ইবাদতের সমতূল্য। আর সেবা বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন- অসুস্থ মানুষকে সেবা শুশ্রুষা করা, ক্ষধার্তকে আহার্য দেয়, গরিবদের বাসস্থান ও পরিধানের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ করাও ইবাদতের শামিল। তাই ধান চাষের ন্যায় মাছ চাষ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা মানুষের খাদ্য-পুষ্টি সরবরাহের মত কাজে প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অংশগ্রহণ করা উচিত। আর মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন করে আমাদের জীবিকাকে প্রসারিত করা হলে আমরা আল্লাহর নির্দেশেই পালন করব এবং আমদের জীবনকে সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ করতে পারব। তাই মাছ চাষের ন্যায় উন্নয়নমূলক কাজে অবশ্যই দেশের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং মাছ চাষের ব্যাপারে সকলের আন্তরিক হতে হবে।
ফজর | ৪:৫৯ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২০-সূরা : তা-হা বড়দের সম্মান কর, ছোটরা তোমাকে সম্মান করবে। নারী-পুরুষের যমজ অর্ধাঙ্গিণী। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |