অদম্য যারা, মেধাবী তারা। অদম্য মেধাবীরা কখনো হারে না তারই জ্বলন্ত প্রমাণ হাজীগঞ্জের পান্না আক্তার। তিনি মায়ের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চিকিৎসকের মতো মহান পেশার শিক্ষা নিচ্ছেন। তবে তার এ পথচলা মোটেও মসৃণ ছিলো না। জীবনের নানা বাঁক-বদলে তিনি আশাহত হননি বরং নিজেকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং যাচ্ছেন।
পান্না আক্তার ঢাকার শেরে-বাংলা নগরস্থ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের দুলাল মিয়া ও কোহিনূর দম্পতির কন্যা। পান্না আক্তার ২০১৯ সালে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সারাদেশে মেধা তালিকায় ৬৭২নং স্থান অর্জন করেন। তিনি জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিসহ জিপিএ-৫ অর্জনেরও রেকর্ড গড়েন।
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের কথা। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠসহ বেশ কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় পান্না আক্তারকে নিয়ে সচিত্র একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি চাঁদপুরসহ সারাদেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। সেই সংবাদের সূত্র ধরেই মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম অদম্য এই মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বহন করেন। তাই তো পান্না আক্তাররা হতে চান মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের মতো একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক। নিজেকে নিয়োজিত করতে চান দেশের সেবায়। পান্না আক্তার বলেন, ভালো চিকিৎসক হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পান্না আক্তারের খোঁজ নেয়া হয়। ১২ জুন শনিবার 'চাঁদপুর কণ্ঠ'-এর পাক্ষিক আয়োজন 'চিকিৎসাঙ্গন'-এর মুখোমুখি হন তিনি। সাক্ষাৎকার নেন আল-আমিন হোসাইন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কেমন আছেন?
পান্না আক্তার : আলহামদুলিল্লাহ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে ভালো আছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার শিক্ষাজীবনের শুরুর দিকের কথা জানতে চাই।
পান্না আক্তার : আমার পড়াশোনার হাতেখড়ি গ্রামের গণশিক্ষা কেন্দ্রে। তখন আমার বয়স সাড়ে চার বছর। সেখানে কিছুদিন পড়াশোনার পর এনজিও সংস্থা ব্র্যাক পরিচালিত প্রি-প্রাইমারি স্কুল থেকে শিশু শ্রেণি পাস করি। তারপর রায়চোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। মূলত আমার পড়াশোনার মূল ভিত্তি এখানেই স্থাপিত হয়। শিক্ষকদের কোমল হাতের ছোঁয়ায় আমার প্রাথমিক শিক্ষা সফলভাবে শেষ হয়। ২০১১ সালে জিপিএ-৪.৫০ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করি।
মাধ্যমিকে ভর্তি হই বেলচোঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে। সবসময় ভালো রেজাল্ট করার একটা অদম্য ইচ্ছে আমাকে তাড়া করতো। তাই ছোটবেলা থেকে একটু একটু করে নিজেকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতাম। কারণ আমি বিশ্বাস করি, 'Slow & steady wins the race'। কেউ যদি ভালো করতে চায় তাহলে হঠাৎ করে তার মধ্যে সবরকম পরিবর্তন আনার চেষ্টা না করে একটা-দুটো করে ভালো গুণ আয়ত্তে আনা দরকার এবং তা নিয়মিত মেনে চলা দরকার। তাহলেই সফল হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এইচএসসি পাসের কথা জানতে চাই।
পান্না আক্তার : বেলচোঁ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সাথে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিসহ জিপিএ-৫ নিয়ে জেএসসি পাস করি। ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ নিয়ে একই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হই। ২০১৯ সাথে জিপিএ-৫ অর্জনসহ সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি নিয়ে এইচএসসি পাস করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চিকিৎসক হবেন এই ভাবনাটা কিভাবে-কখন মনে হলো?
পান্না আক্তার : চিকিৎসক হওয়া আমার মায়ের লালিত স্বপ্ন। আমি শুধু মায়ের স্বপ্নকে বস্তবরূপ দেয়ার চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমার বাবা-মা, শিক্ষক ও আত্মীয়স্বজনদের দোয়ায় আমি স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার পর এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দেয় ভর্তি হওয়া নিয়ে, জানতে চাই সে সময়ে আপনার মনের অবস্থার কথা।
পান্না আক্তার : মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার পর ভর্তি নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তা নিয়ে আমি মোটেই ওরিড ছিলাম না। কারণ আমার সংগ্রামী মায়ের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছিলো। তিনি আমার জন্যে জীবনে সকল বাঁধা প্রতিহত করে সামনে এগিয়ে যেতেন। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আমার শিক্ষকগণ সবসময় আমাকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সাপোর্ট করতেন। এমনকি মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের জন্যে সম্পূর্ণ সাপোর্ট পেয়েছি হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান বেলাল স্যার ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার বিলকিস আরা ম্যাম এবং তাঁদের পরিবার থেকে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে আপনার সংবাদ প্রকাশের পর মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম আপনাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। এ সম্পর্কে কিছু বলুন।
পান্না আক্তার : মহান মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম আমার জন্যে যা করেছিলেন এবং করছেন সেজন্যে আমি আজীবন তাঁর কৃতজ্ঞ থাকবো। মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে পড়াশোনার যাবতীয় খরচের জন্যে তাঁর কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছি। সবসময় তিনি আমার এবং আমার পরিবারের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা দেশের জন্যে কতটা আত্মত্যাগ করতে পারে তা আমি তাঁর মধ্যে ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছি। সেজন্যে আমার কাছে তিনি একজন রোল মডেল।
আমি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের মতো একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হতে চাই এবং দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। ভবিষ্যতে ভালো চিকিৎসক হয়ে অসহায় মানুষগুলোকে সেবা দিতে চাই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আর যাদের সহযোগিতা আপনার কাছে স্মরণীয় থাকবে। তাদের কথা বলুন।
পান্না আক্তার : আমার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতার কথা কখনও ভুলবার নয়।
চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুর কণ্ঠের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কিছু বলুন।
পান্না আক্তার : চাঁদপুর কণ্ঠের পথচলা হোক সফলতা ও গৌরবের সাথে। অজানার মাঝে ছড়িয়ে দিক হাজারো সত্য, রোমাঞ্চকর জানার গল্প। গণমাধ্যম হিসেবে চাঁদপুর কণ্ঠ যেনো সবসময় সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে এবং সততার সাথে আগামীর পথে এগিয়ে যেতে পারে সে কামনা করছি। চাঁদপুর কণ্ঠ জনগণের মাঝে হয়ে উঠুক 'ভালোবাসার চিরকুট'। চাঁদপুর কণ্ঠের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
পান্না আক্তার : ধন্যবাদ।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর
ই-মেইল : [email protected]
ফজর | ৪:৫৮ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২-সূরা বাকারা ২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
৭৩। আমি বলিলাম, 'ইহার কোন অংশ দ্বারা উহাকে আঘাত কর।' এইভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তাঁহার নিদর্শন তোমাদিগকে দেখাইয়া থাকেন, যাহাতে তোমরা অনুধাবন করিতে পার।
সাগরের প্রশংসা করো কিন্তু স্থলে অবস্থান করো। _হার্বাট। নফসকে দমন করাই সর্বপ্রথম জিহাদ।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |