মানবদেহ অপার রহস্যের আধার। তার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে জীবন ও জীবাণুর প্রতিনিয়ত সংগ্রাম ও যুদ্ধের গল্প। সুস্থ জীবনের জন্যে সুস্থ দেহ ও মনের প্রয়োজন অনিবার্য। নিজের দেহকে জানা এবং রোগশোকে তার পরিবর্তন ও করণীয় সম্পর্কে অবহিত থাকা আধুনিক মানুষের এক পবিত্র দায়িত্ব। কেবল রোগ হলেই জানবো, রোগ না হলে জানবো না-এই মানসিকতা পরিহার করে শরীরের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরিবর্তন হতে শুরু করে বড় বড় ঘটনাকে জেনে রাখা দূরদর্শিতার লক্ষণ এবং জ্ঞানীর পরিচায়ক।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের চিকিৎসাঙ্গন কেবল একটি পাতা নয়। বরং বলা যায়, এটি একটি স্বাস্থ্যশিক্ষার বিদ্যালয়। এই পাতার মাধ্যমে কেবল আধুনিক অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসাব্যবস্থাকেই পাঠকের দরবারে আনা হয় না, এতে হোমিওপ্যাথিক ও আয়ুর্বেদীয় বা ইউনানী ব্যবস্থার পাঠ-আয়োজনকেও পাঠকের কাছে তুলে ধরা হয়। মানুষকে চিকিৎসা বিষয়ে জ্ঞানী করে তোলার চেয়ে রোগাকীর্ণ সময়ের মোকাবিলা করতে মানুষ যাতে সচেতন হয়ে ওঠে সে বিষয়ে আলোকিত করে তোলাটাই চিকিৎসাঙ্গনের কাজ। বাঙালি মূলত রোগগ্রস্ত হলে পরামর্শকের অভাব হয় না। এই পরামর্শগুলো কোনোটাই বিজ্ঞানসম্মত নয়। পক্ষান্তরে চিকিৎসাঙ্গনে প্রকাশিত পরামর্শ ও বিভিন্ন ফিচার উপযুক্ত চিকিৎসকের অধ্যয়ন ও অভিজ্ঞানপ্রসূত। কাজেই পাঠকের কাছে চিকিৎসাঙ্গনের মাধ্যমে যে পরামর্শটুকু যায় তা নিরাপদ ও অনুসরণযোগ্য। অজ পাড়া গাঁয়ের রুগ্ন পাঠক থেকে শুরু করে উঁচু স্তরের পাঠক-সবার জন্যেই চিকিৎসাঙ্গন এক নিপুণ তথ্যকেন্দ্র এবং চিকিৎসা বিষয়ে ভুল ধারণা পরিষ্কারের মাধ্যম।
বিশ্বজুড়ে নতুন নতুন জীবাণুর আবিষ্কার ও সংক্রমণ যেমন হচ্ছে তেমনি নতুন নতুন রোগ ও তার নব আবিষ্কৃত চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবহারও হচ্ছে। এসব হালনাগাদ তথ্যকে পাঠকের সামনে আনে চিকিৎসাঙ্গন। কাজেই চিকিৎসাঙ্গন আমজনতার জন্যে একটি উত্তম পাঠকক্ষ।
চিকিৎসাঙ্গনে কেবল যে চিকিৎসা ও রোগ-সম্পর্কিত সংবাদ পরিবেশিত হয় তা নয়, চিকিৎসাঙ্গন জেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রসমূহের সমস্যা ও সঙ্কটের কথা তুলে ধরে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কোনো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর ইতিবাচক অবদানকে প্রচারের মাধ্যমে উৎসাহিত করার পবিত্র কাজটিও চিকিৎসাঙ্গনের দ্বারা সম্পন্ন হয়। স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিপত্র, জনসচেতনতামূলক স্বাস্থ্যবিধির প্রচারে চিকিৎসাঙ্গন উদ্যোগী ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাই চিকিৎসাঙ্গন পাঠে আপনার জানার পরিধি সমৃদ্ধ হবে।
পাঠকের রোগ জিজ্ঞাসার উত্তর যেমন চিকিৎসাঙ্গনে পাওয়া যায়, তেমনি জনস্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসাঙ্গনের তথ্যপ্রবাহেরও কমতি নেই। স্বাস্থ্য বিষয়ে পুষ্টি-সচেতনতা হতে শুরু করে গর্ভবতীর যত্ন ও গর্ভকালীন করণীয়, পরিবার পরিকল্পনা ও জনবিস্ফোরণ রোধের বিষয়ে চিকিৎসাঙ্গন নিয়মিত মানুষকে প্রশিক্ষিত করে চলেছে।
সমাজে চিকিৎসাঙ্গনের ভূমিকা একজন প্রশিক্ষিত হেল্থ এডুকেটরের চেয়ে কম নয়। ভেষজ উদ্ভিজ্জের পরিচিতি ও গুণাবলি যেমন চিকিৎসাঙ্গন কাগজের মাধ্যমে মানুষকে জানিয়েছে, তেমনি করোনাকালে করণীয় বিষয়ে মানুষকে সর্বদা সচেতন করে তুলেছে।
রোগের উৎপত্তি, কারণ, লক্ষণ বা উপসর্গ এবং প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ে দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক ও জার্নালের ভাবনা-চিন্তাগুলো পাঠকের পক্ষে নিজ উদ্যোগে ঘরে বসে পাওয়া দুষ্কর। এক্ষেত্রে চিকিৎসাঙ্গন সেই দুষ্কর কাজকে পাঠকের জন্যে সহজ করে তোলে। বিভিন্ন রোগব্যাধির তুলনামূলক আলোচনা ও করণীয় হতে শিক্ষাগ্রহণ করে নিজের স্বাস্থ্যচর্চাকে ঝুঁকিমুক্ত রাখার ব্যাপারে চিকিৎসাঙ্গন পাঠকের এক অমূল্য সখার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে চিকিৎসাঙ্গন পৌছে দিচ্ছে পাঠকের দরবারে। পাঠক তা পাঠ করে নিজেকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক করে রাখতে পারছে। অনেক সময় কোথায় কী ধরনের চিকিৎসা হয় তা জানিয়ে দিয়ে চিকিৎসাঙ্গন অনেকের শিরঃপীড়া লাঘব করেছে।
চিকিৎসাঙ্গন নিতান্ত কোনো পত্রিকার পাতা নয়, এটা সামাজিক স্বাস্থ্যশিক্ষার একটি দূরদর্শী প্রয়াস। এর মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা যেমন মুখ্য বিষয়, তেমনি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্কট মোকাবিলার শক্তি যোগানোও অন্যতম লক্ষ্য। চিকিৎসাঙ্গন কেবল তথ্যই সরবরাহ করে না, তার তথ্যকে মনোবলে রূপান্তরেও অত্যন্ত কুশলী।
চিকিৎসাঙ্গন সমাজে প্রচলিত ভুল ধারণা ও কুসংস্কার নির্মূলে এক কার্যকর মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এখনও আমাদের দেশে, বিশেষত গ্রামাঞ্চলে অনেকেই দাঁতের ব্যথার তাবিজ নেন কিংবা জন্ডিস হলে কবিরাজের আরক নেন। পালং ধোয়ানোর নাম করে সময় ক্ষেপন করে লিভারের বারোটা বাজান। আজও অনেকেই মনে করেন, গরমকালে কৃমির ঔষধ খাওয়ানো যায় না, গর্ভাবস্থায় মায়ে বেশি খেলে সন্তান মোটা হয়ে যাবে...ইত্যাদি। অনেকেই মনে করেন, সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণকালে গর্ভবতী মায়ের খাওয়া নিষেধ। এতে গর্ভস্থ সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে ভূমিষ্ঠ হয়ে থাকে। কার্যত এসব মান্ধাতার আমলের ধারণা কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। সমাজে অশিক্ষা ও অজ্ঞানতার কারণে প্রচলিত এসব কুসংস্কার নিরসনে চিকিৎসাঙ্গনের ভূমিকা আলোকবর্তিকার মতো। এসব কুসংস্কার দূর না করতে পারলে আমাদের জনস্বাস্থ্য যে তিমিরে ছিলো সে তিমিরেই থেকে যাবে।
তাই চিকিৎসাঙ্গন নিয়মিত পাঠ করুন, নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। নিজেদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অস্পষ্ট ধারণগুলো অপসারণ করে নিজেও অন্যের জন্যে আলোর উৎস হয়ে উঠুন।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর
ই-মেইল : [email protected]
ফজর | ৪:৩৪ |
যোহর | ১২:০৩ |
আসর | ৪:৩০ |
মাগরিব | ৬:১৮ |
এশা | ৭:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২-সূরা বাকারা ২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
৭৩। আমি বলিলাম, 'ইহার কোন অংশ দ্বারা উহাকে আঘাত কর।' এইভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তাঁহার নিদর্শন তোমাদিগকে দেখাইয়া থাকেন, যাহাতে তোমরা অনুধাবন করিতে পার।
সাগরের প্রশংসা করো কিন্তু স্থলে অবস্থান করো। _হার্বাট। নফসকে দমন করাই সর্বপ্রথম জিহাদ।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |