প্রিয়া, খুব সাধারণ একজন মেয়ে। সাধারণ বলতে খুবই সাধারণ। আপনার আমার মতো ওই মেয়েটিও স্বপ্ন দেখতো। তার আকাশেও তারা ঝলমল করতো। তারও নিজের একটা পৃথিবী ছিলো, সেই পৃথিবীতে সে বাঁচতে চাইতো। আপনি-আমি-আমরা বেঁচে থাকা নিয়ে খুব উদাসীন। সারাদিন কত কাজ করি, কত কিছু ভাবি পরের দিনের জন্যে। কাজের পরিকল্পনা করি। এত কিছুর মধ্যে আমাদের কখনো মনেই হয় না যে আমারা যে কোনো সময় মারা যেতে পারি। কারণ আমাদের বেঁচে থাকার জন্যে কোনো কিছুর অভাব নেই।
প্রিয়া একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। মাথার উপর যে ছায়াটা সবচেয়ে বেশি দরকার সেটি সে হারিয়েছে ক্লাস ফাইভে। তার মা সেলাই করে একাই তাদের সংসার চালান। প্রিয়ার ছোট একটা ভাই ও একটি বোন আছে। কখনো আধপেটা আবার কখনো না খেয়েই চলে তাদের সংসার।
প্রিয়া পড়ে গ্রামের একটি স্কুলে। ক্লাস এইটে। খুব বেশি মেধাবী ছাত্রী না সে। কিন্তু সে চায় পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। সে স্কুলের আপা হতে চায়। কারণ স্কুলের আপাদের তার সবচেয়ে ভালো লাগে। আপারা স্বপ্ন দেখতে শেখায়। আপাদের কথা শুনে সে অনেক শান্তি পায়। এক মুহূর্তের জন্যে সে তার জীবনের না পাওয়াগুলো ভুলে যায়।
২০২০ সাল।
প্রিয়া নবম শ্রেণিতে উঠেছে। কিন্তু প্রায় ২ মাস ক্লাস করার পর স্কুল বন্ধ হয়ে যায় কারণ পৃথিবীজুড়ে নাকি একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। নাম করোনাভাইরাস। সেটি বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে। অনেক লোক নাকি আক্রান্ত হচ্ছে। এমন রোগের কথা সে আগে কখনো শোনেনি। সে রাস্তার পাশে লাগানো লিফলেট দেখে এ রোগ সম্পর্কে জানতে পারে। কিন্তু এসব নিয়ে তার কোনো ভাবনা নেই, তার জগত ভালো থাকলেই সে ভালো। কিন্তু ১ মাস পরও যখন স্কুল খুলছে না তখন সে এ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকে। পাশের বাড়ির মিনুর কাছে করোনার খবর জানতে চায়। মিনুদের বাসায় টিভি আছে। সে সব প্রিয়াকে বলে। প্রিয়া খুব ভয় পেয়ে যায়। সে সতর্ক থাকার চেষ্টা করে।
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সে দেখতে পেলো বাড়ির পাশে নদীতে পানি বেড়েছে। বুঝতে পারল বন্যা হবে। মহামারির বিপদ না কাটতেই বন্যা এসে হাজির। ...দুদিন পর তাদের ঘরে পানি চলে আসলো। সেদিন রাতে তাদের ঘুম হলো না। সকালে উঠে বন্যার অবনতি দেখে সে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মাচায় তুলতে লাগলো। বই-খাতা সব ভিজে গেছে দেখে কান্নায় তার দু চোখ ভেসে গেলো। কিন্তু এখন কান্না করার সময় নয়। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হবে। যাওয়ার পথে সে দেখলো তার বয়সী অনেক ছেলে-মেয়ে বন্যার পানিতে মজা করছে, মাছ ধরছে। তাদের কাছে বন্যা অনেক আনন্দের। কিন্তু প্রিয়ার বুক ফেটে যাচ্ছে কষ্টে।
১২ দিন পর তারা অনেক আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরলো। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখল তাদের শেষ সম্বল বাড়ির অর্ধেক পদ্মার গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। মা তাদের ধরে মরাকান্না জুড়ে দিলেন।
প্রিয়া এখন বড় হয়েছে। সবকিছু বোঝার মতো বয়স না হলেও তাকে সবকিছুই বুঝতে হয়। সে ঘর থেকে বের হতে চায় না। কোথাও গেলে সে বুঝতে পারে কিছু লোক তার দিকে বাজেভাবে তাকায়, খারাপ কথা বলে। এসব মায়ের কাছে বললে মাকে অনেক চিন্তা করতে দেখে সে।
একদিন বিকেলে সে দেখতে পেলো তাকে কিছু লোক দেখতে এসেছে। সে বুঝতে পারলো তার বিয়ের কথা হচ্ছে। সে মাকে জানালো সে বিয়ে করতে চায় না। তার বিয়ের বয়স হয়নি। সে পড়তে চায়। কিন্তু মা তার কোনো কথা শুনলো না। তাকে বললো বিয়ে হলে সংসারের খরচ কমবে। এছাড়া সে এখন বড় হয়েছে তাকে দেখার জন্যে কেউ নেই। সংসারের যে অবস্থা তাতে তার মায়ের অন্য কোনো উপায় নেই। ২০২০ সাল তাদের সব কেড়ে নিয়েছে। সে বুঝতে পারলো তার এখানে কথা বলা বৃথা। সেদিন রাতে সে অনেক কান্না করলো। ভাবতে লাগলো গরিব হওয়াটা তার জন্যে কত বড় অভিশাপ। এই পৃথিবীতে কি সে শুধু কষ্ট পেতেই এসেছে? উত্তর পেলো না সে...।
ফজর | ৪:৫৮ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
৭২-সূরা জিন্ন্ ২৮ আয়াত, ২ রুকু, মক্কী ২৪। যখন উহারা প্রতিশ্রুত শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে, বুঝিতে পারিবে, কে সাহায্যকারীর দিক দিয়া দুর্বল এবং কে সংখ্যায় স্বল্প। ২৫। বল, 'আমি জানি না তোমাদিগকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হইয়াছে তাহা কি আসন্ন, না আমার প্রতিপালক ইহার জন্য কোন দীর্ঘ মেয়াদ স্থির করিবেন।'
ভিক্ষাবৃত্তি পতিতাবৃত্তির চেয়েও খারাপ। -লেলিন।
দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানচর্চায় নিজেকে উৎসর্গ করো।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |