স্কুল জীবন বাবা-মায়ের শাসন, শিক্ষকদের তীক্ষ্ম দৃষ্টি আর নজরদারিতে কাটে ছাত্র জীবন। এসএসসি পাসের পর এইচএসসি পা রেখে স্বাধীনতার স্বাদ খুঁজে পায় শিক্ষার্থীরা। আর এদের মধ্যে কারো যদি কলেজের হলে থেকে শুরু হয় উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা, তবে তাদেও তো কথাই নেই। অবাধ স্বাধীনতা তাদের উপভোগ্য প্রতি মুহূর্তে। দশদিকে দশজন এসে নদী সাগরে মিলনের মতো এক ছাদকে আপন করে নেয় পরম মমতায়। নানা ভাষার নানা বয়সের মানুষের মিলনস্থল হলগুলোর চিরায়ত বৈশিষ্ট্য। দিনের কিছু অংশ কেটে যায় পড়াশোনায় আর আড্ডা, খুনসুটিতে কাটে কিছু সময়। হল জীবনের এমন অনুভূতি সম্পর্কে কথা হচ্ছিলো চাঁদপুর সরকারি কলেজের শের-ই-বাংলা ছাত্রাবাসের ক'জন শিক্ষার্থীদের সাথে।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন তার হল জীবনের অভিজ্ঞতার সম্পর্কে বলেন, হলের এক রুমে যদিও আমরা চারজন থাকি চার উপজেলার, তবু আমাদের বন্ধুত্ব হতে দেরি হয় না। সিনিয়র-জুনিয়র কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই সবার সাথে মিশছি। দুঃখ-কষ্ট-আনন্দের মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিয়েছি। এ বন্ধুর মাঝে মাঝে পারিবারিক পর্যায় পর্যন্ত যাওয়া আসা হয়। এক রুমমেটের কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠান হলে একে অন্যদেরকে দাওয়াত দেই। আমরা যাই। আমাদের মধ্যে আস্তে আস্তে পারিবারিক বন্ধন গড়ে।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান, কলেজের ভর্তির এক বছর পর হলে উঠি। প্রথম কেউ কাউকে চিনতাম না। জানতাম না। তাই প্রথম প্রথম নিজেকে কেমন বন্দি বন্দি লাগছিলো। কিন্তু দুই সপ্তাহ না যেতেই হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। অধিকাংশ শুক্রবারেই আমরা বন্ধুরা চাঁদপুরের দর্শনীয় স্থানগুলো চষে বেড়াই। এখন হল জীবন আমার কাছে বেশ উপভোগ্য।
হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ মহিউদ্দিন তুহিন জানালেন, হলে থাকছেন তিন বছর ধরে। হলকে তখন তার নিজের বাড়ির মতোই মনে হয়। রুমমেটের সাথে তার ভাই-ভাইয়ের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। হলের জীবন বৈচিত্র্যপূর্ণ সবসময়ই। সকাল বেলা পত্রিকা পড়া থেকে খাওয়া-দাওয়া, খেলাধুলায় বাধাহীন জীবন স্মৃতির ফ্রেমে ধরে রাখার মতোই মুহূর্তগুলো !
আসাদুজ্জামান আরজু পড়েন ইংরেজিতে। বাড়ি ফরিদগঞ্জে। সেখান থেকে কলেজে আসতে যেতে অসুবিধা। তাই হলে উঠেছেন। তিনি বলেন, আমরা এক একজন এক এক এলাকা থেকে এসেছি সত্যি। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে, ভালো মানুষ হতে, নিজেকে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়তে এসেছি। তাই আমাদের লক্ষ্য আর স্বপ্ন। অনেকই হয়তো ডাক্তার হবে, অনেকে হয়তো ব্যাংকে কাজ করবে... কর্ম ক্ষেত্রে আমরা সবাই আলাদা হতে পারি। কিন্তু এখন আমাদের স্বপ্ন আর সাধনা এক। আমাদের বড় হতে হবে। নিজের নামের মূল্য নিজেকে রাখতে হবে। ছাত্রাবাসে ভালোই আছি।'
হাসিবুল ইসলাম হাসিব পড়েন সমাজকর্মে। তিনিও হলে থাকছেন ক' বছর। তিনি বলেন, হলে সুযোগ সুবিধা ভালোই। খাবার দাবারের মান, পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা আরো ভালো হওয়া উচিত। আর হলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরাও অনেক আন্তরিক। হলে সমস্যা খুব একটা নেই। সুযোগ সুবিধা আরো বৃদ্ধি করা উচিত।
মোঃ রুবেল পাটওয়ারী পড়েন ব্যবস্থাপনায়। তিনি বলেন, আমাদের হলে বিনোদনের জন্যও চাঁদপুরে সুনাম কুড়িয়েছে। এ ছাত্রাবাস থেকে প্রায় প্রতিমাসেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সৃজনশীলতার বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন আয়োজন করা হয়। সাধারণ জ্ঞান, ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট, ভ্রমণের আয়োজন করা হয়। এ কাজে এখানকার শিক্ষার্থীরা বেশ এগিয়ে। আমরা চেষ্টা করি পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকা-গুলোতে অংশগ্রহণ করতে। সব মিলিয়ে ভালোই চলছে ছাত্রাবাস জীবন।
ডিগ্রি পড়ুয়া মোঃ শাহআলম বললেন অন্য রকম কথা। যখন কোনো রুমমেট পড়াশোনা শেষ করে অথবা কারণবশত হল ছেড়ে চলে গেলে কষ্ট লাগে। মনে হয় রক্তের সম্পর্কের কেউ বুঝি ঘর ছেড়ে দূরে কোথাও চলে গেলো। আবার নতুন কেউ আসলে তাকে সানন্দে বরণ করি। পরিবারের একজন কওে নেই।
প্রতি বছরই নতুন মুখ পড়াশোনার তাগিদে হলে উঠে, প্রতি বছরই অধ্যয়ন শেষ করে হল জীবনের সমাপ্তি টানতে হয় অনেক প্রিয় মুখকেও। সময়ের টানে পালাবদলের কিছু স্মৃতি জমে। ছাত্র জীবনের মধুর স্মৃতি। বাকি জীবনের খোরাক হয়ে এসব স্মৃতি বারবারই ফিরে আসে।
ফজর | ৪:৫৮ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২২-সূরা : হাজ্জ আমি আমার নিজের প্রশংসা নিজে করি না বলে লোকে আমাকে সম্মান দেয় বেশি। -ক্যালডিরন। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান চর্চায় নিজেকে উৎসর্গ করো। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |