সবকিছুর স্থায়ী সমাধানের জন্যেই মানুষ মূলত আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কিন্তু নিজেকে হত্যাই কি সবকিছুর সমাধান! তা আমি অন্তত মনে করি না। বাংলাদেশে দিন দিন আত্মহত্যার পরিমাণ ভয়ানক হারে বেড়ে চলছে। বিষণ্নতা, মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা, নিজের সাথে নিজের লড়াইয়ের মনোভাব না থাকা আত্মহত্যার প্রধান কারণ। মানুষের জীবনে খারাপ সময় আসবে এটা স্বাভাবিক। এই সময়টা পার করার মনোভাব না রেখে বরং আত্মহননের শক্তিশালী ও তাৎক্ষণিক তীব্র ইচ্ছা থেকেই এর শুরু।
অনেকে আবার চলমান পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পথ থেকে কিংবা নিজের পরাজিত চেহারা নিজেকে না দেখানোর জন্যেও আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এছাড়াও সামাজিক অবহেলা, কটূক্তি, অপরাধ বোধ পারিবারিক সহিংশতা, যৌন নিপীড়নের স্বীকার থেকেও আত্মহত্যার প্রকোপ বেড়েই চলছে।
পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন; মা-বাবার বিচ্ছিন্নতা অথবা পরিবারের কারো উপর ভরসা করতে না পারাও একটা কারণ। বর্তমানে বহু ছেলে-মেয়ে প্রেমঘটিত সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার পর সম্পর্কের বিচ্ছিন্নতার ব্যথাটাকে মেনে নিতে পারে না। তার জীবনের একটা চলমান রুটিনের বিপর্যয় ঘটে, ফলে একাকিত্বের চাকা ঘোচাতে আত্মহত্যাকে বেছে নেয়। মানুষ সচরাচর সামাজিক, পরিবেশগত কারণ এবং অন্যান্য ঝুঁকি নিয়ে আত্মহত্যা করে।
বর্তমানে আমরা সবাই কোভিড-১৯ নিয়ে আতঙ্কে সময় কাটাচ্ছি। সবাইকে দৈনন্দিন রুটিন থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হচ্ছে। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা, বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে তাচ্ছিল্য অবজ্ঞার জন্যে মানুষ বিষণ্নতায় ভুগছে। ফলে নিজের সাথে নিজের লড়াই করার আগ্রহটা হারিয়ে ফেলছে। ফলে একমাত্র সমাধান হিসেবে নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বেশিরভাগ আত্মহত্যা করে স্বামীর বাড়িতে নীপিড়ন, গর্ভধারণ, বিশ্বাসঘাতকতা, তালাক, সন্তান জন্মদানের অক্ষমতা থেকে। আত্মহত্যার আরও সাধারণ কিছু কারণ হলো দারিদ্র্য, পরীক্ষায় ব্যর্থতা, দীর্ঘকাল রোগযন্ত্রণা। এই সমস্যাগুলো দেশের সামাজিক নিরাপত্তার অভাবের দিকনির্দেশনাও দেয়। আমাদের দেশে অল্পবয়সী মেয়েদের আত্মহত্যার প্রকোপ বেশি।
আত্মহত্যার ধরনও আছে বিভিন্ন রকম। কেউ নিজেই নিজের জীবন নেয়। আবার কেউ কেউ এক বা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করে। একে প্যাক্ট সুইসাইড বলে। আবার কখনো কখনো দলের চাপে অনেকে একসঙ্গে আত্মহত্যা করে। একে বলে ম্যাস সুইসাইড। সাধারণ মানুষের কাছে আত্মহত্যা একটি সাধারণ দুঃখজনক ঘটনা হলেও যারা আত্মহত্যা করে তাদের মানসিক স্থিতিশীলতা এক পর্যায়ে পড়ে না। অনেক আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তি মানসিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতেও অনীহা প্রকাশ করে।
আত্মহত্যা প্রতিকারে সবাইকে এগিয়ে আসা খুব বেশি প্রয়োজন। আপনি যদি কখনো জীবনের মায়া হারিয়ে ফেলেন, তবে শুধু জীবনের খারাপ মুহূর্ত নিয়ে ভাববেন কেনো? আপনার জীবনে নিশ্চয়ই এমন কিছুও রয়েছে, যেটাকে মনে করে আপনার বেঁচে থাকা উচিৎ।
নিজের খারাপ লাগাগুলো কোনো বিশ্বস্ত বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। দেখবেন জীবনে সবাই কোনো না কোনো খারাপ সময় পার করেছে। কিংবা খারাপ সময়ের প্রতিটি মুহূর্তের জন্যে আপনার একান্ত সঙ্গী হতে পারে একটা ডায়েরি। ডায়েরির পাতায় নিজের খারাপ অনুভূতিগুলো ফুটিয়ে তুলতে পারেন। যা একান্তই আপনার।
সবশেষে নিজেকে ভালো রাখবেন, নিজেকে ভালোবাসবেন। নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেবেন। মনে রাখবেন, দিনশেষে আপনি কারো প্রিয় মানুষ। নিজেকে হত্যা মানে কিন্তু এই প্রিয় মানুষগুলোর মনকে হত্যা করা।
ফজর | ৪:৩৪ |
যোহর | ১২:০৩ |
আসর | ৪:৩০ |
মাগরিব | ৬:১৭ |
এশা | ৭:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২-সূরা বাকারা ২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। ৬৮। তাহারা বলিল, আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালককে স্পষ্টভাবে জানাইয়া দিতে বল উহা কিরূপ? মূসা বলিল, 'আল্লাহ বলিতেছেন, উহা এমন গরু যাহা বৃদ্ধও নহে, অল্পবয়স্কও নহে-মধ্যবয়সী। সুতরাং তোমরা যাহা আদিষ্ট হইয়াছ তাহা করো।'
অপ্রয়োজনে প্রকৃতি কিছুই সৃষ্টি করে না। _শংকর।
নামাজ বেহেশতের চাবি এবং অজু নামাজের চাবি।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |