রাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ভিডিওটি ফেসবুকে সরাসরি দেখে অাঁতকে উঠলাম। এও কি সম্ভব! খরবটি পড়ার পর দেশের অনেক হত্যার মতো রাজন হত্যার ঘটনাটি ভুলতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভিডিওটি দেখার পর কোনোভাবে মনকে অন্য দিকে ফিরাতে পারছিলাম না। শিশু রাজনের উপর এক দল হায়েনার আক্রমণের বিষয়টি চোখের সামনে ভেসে উঠে। আর বারবার মনে হচ্ছিল এটি বাস্তব ঘটনা নয়। এমনটি মানুষের হাতে হতে পারে না, এটি ডিসকভার টিভি চ্যানেল বা হলিউডের কোনো পরিচালকের বানানো কোনো টেলিফিল্মের খণ্ড বিশেষ হতে পারে। কোনোভাবেই মানুষ মানব শিশুকে এভাবে লোহার রড দিয়ে মারধর করতে পারে না। হোক না রাজন অন্যের সন্তান গরিবের সন্তান কিংবা মাইক্রো চালকের সন্তান। রাজন তো নিষ্পাপ, তুলতুলে শরীরের ছোট সোনার ছেলে। মারধরের সময় কতো কান্নাকাটি করেছে রাজন ভিডিওতে দেখেছি। বাঁধা অবস্থায় বারবার কাত হয়ে পড়েছে, পানি খেতে চেয়েছে, পানি দেয়নি হায়েনার দল। মা-মা বলে চীৎকার করেছে, থেমে কথা বলছে আবার আঘাতের কারণে হাউমাউ কেঁদে উঠতে দেখা গেছে। পিলারের সঙ্গে পিছমোড়া হাত বাঁধা রাজন একবার কাত হয়ে পড়ে গেছে। সেখান থেকে উঠিয়ে কয়েক কদম হাঁটায় হায়েনার দল। এর পরে একটু সামনে নিয়ে মাটিতে শুইয়ে ছোট শিশুর হাঁটুতে পাড়া দিয়ে পায়ের তালুতে লোহার পাইপ দিয়ে বারবার আঘাত করা হয়েছে প্রবাসী সেই হায়েনা। হায়েনার মন গলেনি। রাজনের হাতে পায়ে লোহার পাইপ দিয়ে পেটানোর পরে একবার বুকে আবার নাভিতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সেটা ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আবার লোহার রডটিকে রাজনের দুই পায়ে লাগিয়ে প্যাঁচিয়ে ধরার চেষ্টা করেছে ঐ নর পশুরা। এক পর্যায়ে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে আমাদের সভ্য সমাজকে বিদায় জানিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো। এরপরেও রাজনের লাশ নিয়ে হায়েনার দল মাইক্রোতে করে গুমের বৃথা চেষ্টা চালায়। আটক করা হয় হায়েনার দলের কয়েকজনকে। আটক হলে কী হবে। আবারো আলোচনায় সেই পুলিশ। যারা আমাদের নিরাপত্তা সেবার জন্য নিয়োগকৃত। বারো লাখ টাকায় আমাদের নিরাপত্তা দেবার কর্তারা নিরাপত্তা দিয়ে আসল হায়েনাকে বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
আমরা চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জে মানববন্ধন করে রাজন হত্যার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানিয়েছি। নূ্যনতম বিবেকবান মানুষ ভিডিওটি দেখে স্থির থাকতে পারবে না। আর তা দেখেই দেশের মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠে। রাজনের বাবার কথার সূত্র ধরে প্রকাশ পায় পুলিশের চরিত্র। আবার এই মামলাটির তদন্ত হবে কিংবা চার্জশীট দিবে। এই পুলিশ এখানে সমীকরণ কীভাবে করবে তা বোধগম্য নয়।
আমার ছয় বছরের একমাত্র ছেলে অয়ন প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। পড়ার জন্যে তাকে মাঝে মধ্যে ধমক দেই। একবার তাকে পাটখড়ি দিয়ে দুটো আঘাত করেছি পড়ার জন্যে। মারার জন্যে মনে কষ্ট পেয়েছি বলে আঘাতের চিহ্নগুলো আমি দেখতে পারিনি। তাই মাকে বলেছি ঐ ক্ষতস্থানে একটু সেভলন লাগিয়ে দিতে। তখন আমার মা বলেছিলেন, মেরে আবার প্রাণ কাঁদে কিভাবে? আমার ছেলের জন্যে এতোটুকু মায়া থাকলে অন্যের জন্যে এতোটুকু থাকবে না কেন? জলজ্যান্ত একটি ছোট মাছুম বাচ্ছার কান্নাকাটি, আঘাতের পর আঘাত, নিস্তেজ হয়ে পড়া, মাইক্রোগাড়ির পিছনে লাশ ফেলে রাখা, যে ছেলেটি কাঁদছে সেই ছেলেটিকে মাইক্রোর পিছনে লাশ বানিয়ে রেখে দেয়া, আর খাটিয়ার মধ্যে সাদা কফিনে মোড়ানো দুরন্ত রাজনকে দেখছে এলাকাবাসী, মাত্র কয়েক ঘন্টার চিত্র। ভাবতেই বুকটা ফেটে যায়। ঐ হায়েনার দলের কি রাজনের মতো সন্তান নেই? একবার কেনো তাদের মনটা কেঁদে উঠলো না। যারা আসল হায়েনাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে তাদের কি রাজনের মতো সন্তান নেই? থাকলে কি এমন হতে পারতো? পারতো না। তাদের সন্তান থাকলে প্রথম দিনেই সকল হায়েনা আটক হতো। ফেসবুকের মাধ্যমে নয়, পুলিশের মাধ্যমে দেশের জনগণ ঘটনাটি জানতে পারতো। দেশের নাগরিক হিসেবে আশা করবো, সরকার মামলাটিকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে দ্রুত বিচার কার্য সম্পাদন করবে।
আমাদের আইন অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের মামলা আদালতে উঠলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সাক্ষী আলামত, অনেক ক্ষেত্রে ফরেনসিক রিপোর্ট, সাক্ষী প্রমাণসহ আরো বেশ কিছু তথ্য আদালতে উপস্থাপন করতে হয়। আর রাজন হত্যাকাণ্ডে এসবের কিছুই প্রয়োজন নেই বলে আমার একার ধারণা। মাননীয় আদালত শুধু মাত্র ভিডিওটি দেখলেই অনায়াসে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বুঝতে পারবেন। আর তাতেই বিচার কার্যের ফলাফল ঘোষণা করতে পারবে বলে আমি মনে করি।
ফজর | ৪:৩৪ |
যোহর | ১২:০৩ |
আসর | ৪:৩০ |
মাগরিব | ৬:১৮ |
এশা | ৭:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২০-সূরা : তা-হা ১৩৫ আয়াত, ৮ রুকু, মক্কী পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্ নামে শুরু করছি। ৪৮। ‘আমাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করা হইয়াছে যে, শাস্তি তো তাহার জন্য, যে মিথ্যা আরোপ করে ও মুখ ফিরাইয়া লয়।’ দয়া করে এই অংশটুকু হেফাজত করুন আগে সময় সম্বন্ধে সচেতন হও, তারপর কাজ করো। -সিন্ডেলা। পরনিন্দাকারী বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না। - হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |