আমাদের দেশে গবাদি-পশুপাখির রোগের প্রতি অবহেলা সীমাহীন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর তাদের ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বে ভেটেরিনারি চিকিৎসা, রোগ নির্ণয় ও রোগ সার্ভিল্যান্স ব্যবস্থার ব্যাপক অগ্রগতি হলেও বাংলাদেশে তা আশানুরূপ নয়। এর প্রধান কারণ এই ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যাপারে জনগণের সচেতনতা কম। তদুপরি আছে জনবল ও বাজেটের স্বল্পতাও। বাংলাদেশ ইতঃমধ্যে প্রাণীজ আমিষে স্বয়ংসম্পন্ন হয়েছে। দেশে দুধ, ডিম ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু গবাদি-পশুপাখির চিকিৎসায় যথাযথ গুরুত্ব না দেয়ার কারণে উৎপাদন যেমন ৩৫-৫০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি তার সংস্পর্শে থাকা মানুষদের মধ্যেও সংক্রমিত হচ্ছে বিভিন্ন রোগ-বালাই। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৩১ শতাংশ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ৬১ শতাংশ মানুষ জড়িত। তারা নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছে, যা আমাদের অর্থনীতিতে ফেলছে বিরূপ প্রভাব। তাই ভেটেরিনারি চিকিৎসার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া খুবই জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ যে সকল রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে তার ৭৫ শতাংশই আসে গবাদিপশু হতে। জলাতঙ্ক, অ্যানথ্রাঙ্, যক্ষ্মা, ব্রুসেলোসিস, নিপা ভাইরাস, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ আরও কিছু রোগের জীবাণুর উৎস গবাদিপশু। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও আমেরিকাসহ যে-সকল দেশের গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ভালো, সে-সকল দেশের মানুষের স্বাস্থ্যও ভালো। তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এই ব্যাপারে নজর দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সমস্যা হলো, খামারিরা পশু-পাখির রোগ জটিল না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে চান না। যেখানে নিজের অসুখ-বিসুখে ডাক্তার দেখানোর প্রতি তাদের অবহেলা অপরিসীম, সেখানে গরু-ছাগল অসুস্থ হলে টিকা দেওয়া, ঔষধ খাওয়ানো ইত্যাদির ব্যাপারে তাদের উদাসীনতা থাকাটাই স্বাভাবিক। এতে রোগ-বালাই ছড়াতে থাকে। অসুস্থ গরু-ছাগল জবাই করা হলেও মাংস হতে রোগ ছড়িয়ে থাকে। আবার অসুস্থ গবাদিপশু মারা গেলে যে পদ্ধতিতে মাটিচাপা দিতে হয়, তা না দেয়ার কারণেও রোগ বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। কেউ কেউ বিভিন্ন পোলট্রি ফার্মে রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণে চিকিসৎকের পরামর্শ ছাড়া নিজেরাই বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে, যা কাম্য নয়। কেননা এর প্রভাবও মানুষের শরীরের ওপর পড়ে থাকে।
ব্যক্তিগত সচেতনতার অভাবের পাশাপাশি পশু-পাখির রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। গবাদিপশুর জন্যে তড়কা, বাদলা, গলাফুলা, খুরারোগ, পিপিআর, জলাতঙ্ক, গোট ও প্লেগসহ ৮টি এবং হাঁস-মুরগির জন্যে রানীক্ষেত, বাচ্চার রানীক্ষেত, মুরগির বসন্ত ও কলেরা, হাঁসের প্লেগ, পিজিয়ন পঙ্, গামবোরো, মারেঙ্ ও সালমোনেলাসহ মোট ১৭টি টিকা উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী তা পর্যাপ্ত নয়। বিশেষত গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি দ্বিখুরবিশিষ্ট গবাদিপশুর মারাত্মক খুরা রোগের টিকার উৎপাদন দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। এছাড়া সকল উপজেলায় ভেটেরিনারি সার্জন নেই। প্রতিটি উপজেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রে রোগ নির্ণয়ের প্রাথমিক সুবিধা ও প্রতি জেলায় ভেটেরিনারি হাসপাতালে মিনি ল্যাবরেটরি থাকলেও নেই কাঙ্ক্ষিত জনবল। আবার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারটিও জরাজীর্ণ। বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে নেই স্থায়ী এপিডেমিওলজি ইউনিট। অতএব, এ সকল ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ করা অত্যাবশ্যক।
ফজর | ৪:৫৯ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
৪০-সূরা আল মু’মিন
যে দীর্ঘ সময় ঘুমাতে পারে, সেই সবচেয়ে সুখী।
পরিচ্ছন্নতার উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত হইয়াছে। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |