নিজে একসময় খেলাধুলা করতেন। বেশ কিছুদিন আগে চাকুরি হওয়ার কারণে খেলাধুলা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু খেলার মাঠ এবং খেলাধুলা থেকে চলে যেতে পারেননি। জীবনের শুরু থেকে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয়েছে। ছেলেবেলায় যখন তার বয়স ৬ কিংবা ৭ হবে তখন তার বাবা তাদেরকে পৃথিবীর বুকে রেখে চলে যান না ফেরার দেশে। অনেকটা গর্ভধারিণী মা, মামা এবং বর্তমানে স্ত্রীর সহযোগিতায় সকল কিছুর সাথেই মানিয়ে চলছেন। তারপরও তার কোনো অতৃপ্তি নেই। ছোটখাট সরকারি কাজের সাথে জড়িত থাকলেও কাজকে ফাঁকি দিয়ে কোনোদিন খেলার মাঠে দেখা যায়নি। এখনও চরম রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকেও আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করেন। এরই ফাঁকে একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমী ও চাঁদপুর ক্রিকেট কোচিং সেন্টারের ভালো একটা দায়িত্বও পালন করছেন অনেক নিষ্ঠার সাথে। চাঁদপুরের ক্রিকেটের কর্ণধার সৈয়দ শামীম ফারুকীর হাতে গড়া এ সাবেক ক্রিকেটার আম্পায়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বিসিবির অধীনে বাংলাদেশ আম্পায়ার অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে। তিনি হলেন ক্রীড়াঙ্গনের সকলের পরিচিত মুখ রিপন কর্মকার (রিপন মামা)। তার পিতার নাম স্বর্গীয় কালিপদ কর্মকার। মাতা আরতি কর্মকার। জোড়পুকুর পাড়ে তার নিজ বাসস্থান থাকলেও বর্তমানে তিনি মা, স্ত্রীসহ বসবাস করছেন শহরের ঘোষপাড়া এলাকায়।
২০০৬ সালে রিপন কর্মকার বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম জেলি সাহা। তার স্ত্রী চাঁদপুর সদরের মধ্য বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ২০০৯ সালে চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করেন। তিনি তার প্রাইমারী জীবন শুরু করেন চাঁদপুর শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কস্থ ১২৫নং কেজি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত গণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ডিগ্রি পাস করেন। ছেলেবেলায় জোড় পুকুর এলাকায় থাকার কারণে তখন থেকেই ফুটবলের সাথে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে শামীম ফারুকীর বাসার পাশে থাকার কারণে ও তার অনুপ্রেরণায় এবং অভিভাবকের মতো দায়িত্ব নেয়ার কারণে শামীম ফারুকীর সাথেই শুরু করে দেন ক্রিকেটে যাত্রা। প্রথমে টেনিস, তারপর টেপটেনিসকে বিদায় দিয়ে ক্রিকেটের মূল ধারাতেই প্রবেশ করেন। ক্রিকেট খেলা অবস্থায় দলের প্রতিনিধিত্বও করেছেন। তার খেলোয়াড়ি জীবনে অধিনায়ক হিসেবে ও দলকে শিরোপা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং স্পিন বোলার হিসেবে তাকে দেখা যেতো ক্রিকেট খেলার সময়। খেলা চলাবস্থায় তিনি সুযোগও পেয়েছিলেন রাজধানী ঢাকাতে একটি ক্লাবে খেলার। বর্তমানে অনেকটা ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমী চাঁদপুরের সাথেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। ক্রিকেটারদের কাছে রিপন স্যার কিংবা রিপন মামা হিসেবেই রয়েছে তার পরিচিতি। ক্রীড়াকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের সাথে তার খেলোয়াড়ি জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরেন তার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের বিভিন্ন বিষয়। ক্রীড়ামোদী পাঠকদের জন্যে তার তুলে ধরা বক্তব্যগুলো হুবহু পত্রস্থ করা হলো:-
ক্রীড়াকণ্ঠ : কেমন আছেন?
রিপন কর্মকার : জি¦, আপনাদের দোয়া এবং আশীর্বাদে ভালো আছি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : কোন্ ক্লাসে পড়া অবস্থায় খেলাধুলার সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং তখন কারা কারা সাথে ছিলো?
রিপন কর্মকার : আমি ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতাম। জোড়পুকুর পাড়ে বাসা হওয়ায় চলে যেতাম পার্কে ও মাঠে। ওই সময়ে হিমু, রানা, মৃনাল, শাহেদ, আরজু, মরহুম আজিম ভাই, কামরুল, লিটু, ভুট্টো, এসডি রুবেল দা, মোক্তার, নুরু, মোতালেব, কমল, জনি, সুখন রামু, মধু দা, সুবিরসহ খেলতাম। আমাদের বাসার পাশেই তখন শামীম মামারা থাকতেন। তখন আমি ফুটবল খেলতাম। তিনিও তখন খেলাধুলা করতেন। তিনি আমাকেসহ নিটুল, সুখন, সুদীপ, শ্যামল, বাবুল ও সজলকে পার্কের মাঠে নিয়ে যান এবং মোহামেডান ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট প্র্যাকটিস শুরু করান। এছাড়া ছোটকাল থেকেই জোড়পুকুর পাড়ে নানার মাঠ, চারার মাঠ, কেজি স্কুল মাঠ, বিআরটিসি গোডাউনের মাঠে তো খেলেছিই।
ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুর যুব ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছিলেন? আপনাকে খেলাধুলায় উৎসাহ ও সহযোগিতা দিয়েছেন?
রিপন কর্মকার : আমি ১৯৯৩-৯৪ সালে যুব ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ পাই। আমি মামাদের বাড়িতে বড় হয়েছি। আমার পিতৃতুল্য অরুণ কর্মকার (মামা) আমাকে খেলাধুলায় উৎসাহ দিতেন। আমার জীবনে চলার মূলে আমার মা, মামা, দুই গুরু শামীম মামা ও বেনু দাদা এবং বর্তমানে আমার স্ত্রী। মামা ঢাকায় থাকেন। তিনি একসময় বেক্সিমকো কোম্পানীতে অডিটর পদে চাকুরি করতেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। তিনি একসময় ভালো ফুটবল খেলতেন শামীম মামাদের সাথে।
ক্রীড়াকণ্ঠ : জেলা ক্রিকেট লীগে খেলেছেন বা জেলার অন্য কোনো দলে?
রিপন কর্মকার : হ্যাঁ , আমি চাঁদপুর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মাধ্যমেই জেলা ক্রিকেট লীগে খেলার সুযোগ পাই এবং দলের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছি। আমি বলতে পারি যে, ১৯৯৩ সালে এবং ২০০১ সালে আমার অধিনায়ক থাকাকালীন সময়েই মোহামেডান ক্লাব চাঁদপুরের ক্রিকেট লীগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এছাড়া আমি চাঁদপুর জেলার জুনিয়র এবং সিনিয়র দলের হয়ে ১০ থেকে ১১ বছর খেলেছি। আর চাঁদপুরে ক্রিকেট লীগে ১৯৯২ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত আবাহনী, মোহামেডান, চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমী ও পাইওনিয়ার ক্লাবের হয়ে খেলি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : জেলা ক্রিকেট দলের হয়ে কোথাও খেলেছেন?
রিপন কর্মকার : হ্যাঁ, আমি চাঁদপুর জেলা ক্রিকেট দলের হয়ে চাঁদপুরের বাইরে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন মাঠে খেলেছি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকাতে কোন্ ক্লাবে খেলেছিলেন, কিংবা চাঁদপুরের কোন্ দলের হয়ে?
রিপন কর্মকার : হ্যাাঁ, আমি ১৯৯৭ সালে ঢাকা শতরূপা ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ পেয়েছি। এছাড়া চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমীর হয়ে ঢাকায় ৩য় ও ২য় বিভাগ ক্রিকেট লীগে খেলি। এই একাডেমীর হয়ে ঢাকায় বাছাই ক্রিকেটে অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করি। চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমী দলের প্রথম অধিনায়ক ছিলাম আমি (চাঁদপুর ও ঢাকায়)। আমার নেতৃত্বে ঢাকার লীগে টানা ২৬ ম্যাচে জয়লাভ করি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনি কি আম্পায়ারিং এবং ট্রেইনারের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন?
রিপন কর্মকার : আমি চট্টগ্রামে বিসিবির মাধ্যমে ট্রেইনার এবং আম্পায়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিই। আমাদের ওই প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার এনামুল হক মনি, যিনি বর্তমানে দেশ-বিদেশে আম্পায়ারিংয়ের সাথে জড়িত রয়েছেন, তিনি প্রশিক্ষণে এবং প্রশিক্ষণের সমাপনীতে উপস্থিত ছিলেন।
ক্রীড়াকণ্ঠ : এখন কি ক্রিকেট কোচিংয়ের সাথে জড়িত আছেন?
রিপন কর্মকার : বর্তমানে আমি অফিস সময়ের পর শামীম স্যারের সহকারী হিসেবে জেলার বয়সভিত্তিক দলের কোচিং দিয়ে থাকি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরের ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে এবং আপনার কিছু স্বপ্ন যদি থাকে বলেন।
রিপন কর্মকার : আমার মূল কথা হচ্ছে খেলাধুলায় ভালো কিছু করতে হলে নিয়মিত সঠিক অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে খেলোয়াড়দেরকে। একজন ক্রিকেটার কিংবা ফুটবলার বা ক্রীড়াভিত্তিক যে কোনো ইভেন্টের সাথেই জড়িত থাকুক না কেন, তার অনুশীলনের উপরই নির্ভর করবে তার খেলাধুলার সকল কিছু। বর্তমানে চাঁদপুরের অনেক ক্রিকেটারই ঢাকাতে জাতীয় বয়সভিত্তিক দলসহ নামী-দামী ক্লাবগুলোতে খেলছে। তারা একসময় নিয়মিতই মাঠে অনুশীলন করেছে। যাদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ আছে তারা নিয়মিত মাঠে আসবেই। আর আমি আমার ক্রীড়াঙ্গনের সকল কিছুর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই শামীম মামা (শামীম স্যার)কে। আমার জীবনের একটা বড় দুঃখ হলো এতো পরিশ্রম করেও পারিবারিক ও বিভিন্ন সমস্যার জন্যে বড় লেভেলে খেলতে না পারা। এজন্যে চাঁদপুরের কেউ বড় লেভেলে খেললে আমার অনেক আনন্দ হয়। আমি চাই চাঁদপুরের ছেলেরা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলুক। আমি চাঁদপুরের ক্রিকেটের উন্নয়নের লক্ষ্যে একজন সফল ক্রীড়া সংগঠক ও জনপ্রতিনিধি অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান ভাই এবং শ্রদ্ধেয় নজরুল ভাইয়ের সহযোগিতায় ও প্রেরণায় কাজ করে যাচ্ছি। আমি যা পারিনি, আমাদের ছাত্ররা সেটা করে দেখাবে এটাই আমার স্বপ্ন।
ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
রিপন কর্মকার : জি¦ আপনাকে ও আপনার পত্রিকার প্রতি রইলো ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
ফজর | ৪:৫৮ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
হেরার আলো দুষ্ট লোকেরা নিজেরাই নিজেদের নরক তৈরি করে। -মিলটন।
পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |