চাঁদপুর, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১, ১ আষাঢ় ১৪২৮, ৩ জিলকদ ১৪৪২
jibon dip

সর্বশেষ খবর :

  • -
চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
সাফল্যময় পথচলার ৭০ বছর
১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০:০০
প্রিন্টঅ-অ+


চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ১৯৪৬ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় চাঁদপুর সরকারি কলেজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি এ অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে অর্থবহ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ কলেজের অন্যতম পুরানো বিভাগ 'উদ্ভিদবিজ্ঞান'। ২০২১ সালে এ বিভাগটি সাফল্যময় পথচলার ৭০ বছর অতিক্রম করছে।



 



চাঁদপুর কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৫১ সালে এ কলেজে জীববিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে ১৯৬৩ সালে বিএসসি (পাস) কোর্স নিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। অনার্স কোর্স চালু হয় ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে। এ বিভাগের প্রথম বিভাগীয় প্রধান ছিলেন বশির উদ্দিন আহমেদ। অনার্স কোর্সের শুরুর সময়ে প্রফেসর মোঃ আসাদুল হাসনাত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ বিভাগের বর্তমান বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ কামরুল হাছান। বর্তমানে বিভাগটিতে ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। অনার্স ও মাস্টার্সে অধ্যায়ন করছে ৬২৭ জন শিক্ষার্থী।



 



উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা জানান, ফলাফল ও সহ-পাঠক্রমিক কার্যক্রমে বিভাগের শিক্ষার্থীরা সবসময় সাফল্যের পরিচয় দিয়ে আসছে। এ বিভাগের মাস্টার্স (চূড়ান্ত) পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে এ বিভাগ থেকে ২৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ২১ জন। পাসের হার ৯২ ভাগ। এর মধ্যে ১৯ জন শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণি পেয়েছে। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ১৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৮ জন। পাসের হার ৯৫ ভাগ। শতভাগ শিক্ষার্থীই প্রথম শ্রেণি পেয়েছে। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে এ বিভাগ থেকে ৩২ জন পরীক্ষা দিয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে ২৬ জন শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণি পেয়েছে। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ২৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে শতভাগ পাস করে। জিপিএ-৩-এর বেশি পেয়েছেন ২১ জন শিক্ষার্থী।



 



উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স (চূড়ান্ত) পরীক্ষার ফলাফলও আশাপ্রদ। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এ বিভাগ থেকে ৩২ জন পরীক্ষা শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণি পেয়েছে ২৭ জন শিক্ষার্থী। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ৩১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ২৮ জন। পাসের হার ৯১ ভাগ। প্রথম শ্রেণি পেয়েছে ২৩ জন। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ৪১ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৩ শিক্ষার্থী পাস করেছে। পাসের হার ৮১ ভাগ। প্রথম শ্রেণি পেয়েছে ৩২ জন। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে এ বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়েছে ৬৩ জন। পাস করেছে ৫৪ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ৮৬ ভাগ। প্রথম শ্রেণি পেয়েছেন ৪৬ জন।



 



সহ-পাঠক্রমিক কার্যক্রমে এ বিভাগের সাফল্য ঈর্ষণীয়। জেলার গন্ডি পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়েও শিক্ষার্থীরা সুনাম কুড়িয়েছে। সহ-পাঠক্রমিক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অর্জন সম্পর্কে বিভাগসূত্রে জানা যায়, এ বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ ফরহাদ হোসেন আরিফ ২০০১ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ রোভার স্কাউট নির্বাচিত হয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন। আরেক শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার তন্বী জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ২০১১, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৮ সালে জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন এবং ২০১৫ ও ২০১৬ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন। আরেক শিক্ষার্থী আফসানা আক্তার তন্বী ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট স্কাউটস অ্যাওয়ার্ড, ২০১৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে লোকনৃত্যে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন। তিনি একই বছর বিএনসিসি ক্যাডেট হিসেবে সিঙ্গাপুরে আইসিইপি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বিভাগের শিক্ষার্থী সামাদ মোল্লা সৌরভ বিএনসিসি ক্যাডেট হিসেবে ২০১৮ সালে শ্রীলংকায় প্রশিক্ষণ, প্রিভেল মাহমুদ ২০১১ সালে বাংলাদেশ স্কাউটস ন্যাশনাল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড অর্জন, এইচএম জাকির চাঁদপুর সরকারি কলেজ বিএনসিসির ইনচার্জ ও সর্বোচ্চ পদবি ক্যাডেট আন্ডার অফিসার অর্জন এবং বিএনসিসি ময়নামতি রেজিমেন্টের চার্লি কোম্পানির দায়িত্ব পালন করেন। শুধু তাই নয়, বর্তমান বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ কামরুল হাছান, মোঃ সায়েদুল ইসলাম ও নূরে আলম সবুজের তৈরি বিজ্ঞান প্রজেক্ট ২০০১ সালে জাতীয় পর্যায়ে সেরা দশে স্থান করে নেয়।



 



উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সম্ভাবনা সম্পর্কে শিক্ষকরা বলেন, এ বিভাগে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ সম্পর্কে জানা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। এখান থেকে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করতে পারবে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে গবেষণা করতে পারবে। এছাড়াও পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস ক্যাডারসহ সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরির সুযোগ রয়েছে।



 



বিভাগ-সূত্রে জানা যায়, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সুসজ্জিত ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা হয়। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে নিজস্ব স্টুডিও থেকে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। বিভাগের সকল পরীক্ষা ও নোটিশ অনলাইনে নিজস্ব পেজে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতবিনিময় সভা এবং শিক্ষাসফরের আয়োজন করা হয়। এছাড়া এই করোনাকালে ৪৫ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে ২ হাজার ৫শ' টাকা করে বিভাগের পক্ষ থেকে প্রণোদনা প্রদান করা হয়।



বিভাগের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে শিক্ষকরা জানান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকটি সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে শ্রেণিক্ষক সঙ্কট ও শিক্ষক-কর্মচারী স্বল্পতা অন্যতম। শিক্ষকদের অফিসরুম সঙ্কট রয়েছে। বিভাগে দেশি-বিদেশি দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান প্রায় ২ হাজার বই নিয়ে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি থাকলেও সেমিনার কক্ষ নেই। বিভাগে আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি গবেষণাগার রয়েছে। বর্তমানে এর পরিসর বৃদ্ধি করা সময়ের দাবি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্যে একটি ওয়াশরুম প্রয়োজন। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর হলে শিক্ষার্থীদের পথচলা আরো সমৃদ্ধ হবে।



 



বিভাগ সম্পর্কে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, প্রতিষ্ঠা-লগ্ন থেকেই এ বিভাগ থেকে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফলের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে নিজস্ব ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হওয়ায় অনার্স কোর্সের শুরু থেকেই আমার পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক প্রফেসর মোঃ আসাদুল হাসনাত বিভাগের অন্য শিক্ষকদের নিয়ে কীভাবে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে শ্রম দিয়ে সাফল্য ধরে রেখেছেন তা আমি কাছ থেকে দেখেছি। পরবর্তী বিভাগীয় প্রধানগণ ধারাবাহিকতা রেখেছেন বলেই আমি এমন একটি পরিপাটি বিভাগ পেয়েছি। আমাদের সুযোগ্য অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাস স্যারের নির্দেশনা ও সার্বিক সহযোগিতায় বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ বিভাগকে দেশের সেরা বিভাগের তালিকায় নাম লেখাতে পারবো বলে আশা করি।



 



 



 



 



 



 



 


হেরার আলো
বাণী চিরন্তন
আল-হাদিস

২-সূরা বাকারা


২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী


পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।


৭৪। ইহার পরও তোমাদের হৃদয় কঠিন হইয়া গেল, উহা পাষাণ কিংবা তদপেক্ষা কঠিন। পাথর ও কতক এমন যে, উহা হইতে নদী-নালা প্রবাহিত এবং কতক এইরূপ যে, বিদীর্ণ হওয়ার পর উহা হইতে পানি নির্গত হয়, আবার কতক এমন যাহা আল্লাহর ভয়ে ধসিয়া পড়ে এবং তোমরা যাহা কর আল্লাহ সে সম্বন্ধে অনবহিত নহেন।


 


 


 


 


শিক্ষার শেকড় তেতো হলেও এর ফল মিষ্টি। _এরিস্টটল।


পিতার প্রতি পুত্রের কর্তব্য যে রূপ জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার প্রতি কনিষ্ঠের কর্তব্য ও তদ্রূপ।


 


 


ফটো গ্যালারি
করোনা পরিস্থিতি
বাংলাদেশ বিশ্ব
আক্রান্ত ৭,৫১,৬৫৯ ১৬,৮০,১৩,৪১৫
সুস্থ ৭,৩২,৮১০ ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮
মৃত্যু ১২,৪৪১ ৩৪,৮৮,২৩৭
দেশ ২০০ ২১৩
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
আজকের পাঠকসংখ্যা
৩১৩৫৪১৯৯
পুরোন সংখ্যা