সবজি হিসেবে মিষ্টি কুমড়া ধনী-গরিব সকলের কাছে সমানভাবে সমাদৃত। মিষ্টি কুমড়ার ভাজি, তরকারি, মিষ্টি কুমড়ার পাতা, লতা এবং ফুল সবই বাঙালির খাদ্য তালিকায় প্রাচীনকাল থেকেই পছন্দের খাবার। আমাদের দেশে সবজির তালিকায় কুমড়া অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম। মাছের মধ্যে পাঙ্গাশসহ কিছু মাছ যেমন কম-বেশি বিভিন্ন ওজনের হয়, তেমনি সবজির মধ্যে কুমড়াও হয়ে থাকে। কমপক্ষে এক-দেড় কেজি থেকে ১০ কেজি বা ততোধিক ওজনের কুমড়াও হয়ে থাকে। কুমড়ার প্রকারভেদ আছে। যেমন : মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, জালি কুমড়া ইত্যাদি। মিষ্টি কুমড়ার আকার পেট মোটা গোল এবং পাকা অবস্থায় এর ভেতরের অংশ উজ্জ্বল কমলা বর্ণের হয়ে থাকে। চাল কুমড়া বা জালি কুমড়া বাইরে সবুজ বর্ণের হয়, তবে ভেতরাংশ সাদা। কুমড়ার লতাপাতা বা শাক এবং ফুল দুটোই সুস্বাদু। মিষ্টি কুমড়াসহ ছোট-বড় চিংড়ি মাছের রান্না খুবই মুখরোচক। মিষ্টি কুমড়ার রয়েছে বহুবিধ পুষ্টিগুণ। অ্যান্টি অঙ্েিডন্ট সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া কোলেস্টেরল কমাতে ও রক্তনালীর দেয়ালে চর্বির স্তর জমতে বাধা প্রদানে সাহায্য করে। মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন 'এ'। বিটাক্যারোটিন সমৃদ্ধ এই সবজিটি তাই চোখের জন্যে খুবই ভালো। বয়সজনিত রোগ বিশেষ করে রেটিনার বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধে মিষ্টি কুমড়া বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু চোখের অসুখ নয়, ভিটামিন 'এ'র অভাবজনিত অন্যান্য রোগেও মিষ্টি কুমড়া উপকারী।
মিষ্টি কুমড়া তরকারি বা পণ্য হিসেবেও ব্যবসায়িক মূল্য রয়েছে। তাই মিষ্টি কুমড়া চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে হাজীগঞ্জের চাষীদের। চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কের দুই পাশে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে মিষ্টি কুমড়ার গাছ। কৃষকের নিপুণ হাতে লাগানো কুমড়া গাছের সবুজ লতানো গাছ মাঠের মাটির উপর বিছানার মতো ছড়িয়ে আছে। কম খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় এবং লাভজনক ফসল হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় মিষ্টি কুমড়া চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এ ব্যাপারে কথা হয় হাজীগঞ্জ উপজেলার ধেররা গ্রামের মিষ্টি কুমড়া চাষী মোঃ বিল্লাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, প্রথমে এভাবেই মিষ্টি কুমড়া চাষ শুরু করি। পরে তা বাণিজ্যিক চিন্তা মাথায় আসায় প্রথমে অল্প করে মিষ্টি কুমড়া চাষ শুরু করি। বর্তমানে নিজের ও বন্দকি জমিসহ মোট ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করছি। এ বছর মিষ্টি কুমড়া চাষে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২৫,০০০ টাকা বলে জানান। আর উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কি পদ্ধতিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্ষার পানি কমতে শুরু করলে আশি্বন মাসে প্রথমে কচুরিপানা স্তূপ করে রাখি। তার উপর কিছু মাটি দিয়ে মিষ্টি কুমড়ার উন্নত জাতের বীজ রোপণ করি। তারপর নিয়মিত পরিচর্যা করি। এছাড়া তেমন কোনো খরচ নেই। তবে পোকামাকড় থেকে কচি মিষ্টি কুমড়া নিরাপদে রাখার জন্যে নিয়ম মেনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা পাওয়া যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে আসেন তবে সকল কৃষক সমান সহযোগিতা পায় না।
কথা হয় একই গ্রামের মোঃ বিল্লাল মিয়ার সাথে। তিনি ৩০ শতাংশ জমিতে নিয়ে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন। তার জমির উপর কৃষি সমপ্রাসরণ অধিদপ্তরের প্রদর্শনী সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে। তিনি জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে ১৫০০ টাকা পেয়েছেন মিষ্টি কুমড়া চাষের জন।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, ইরি মৌসুমের আগে যে সময়টা জমি খালি পরে থাকতো সে সময় কৃষকরা অল্প বিনিয়োগ করে অধিক মুনাফা পায় বলেই মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বাড়ছে হাজীগঞ্জের চাষীদের। কৃষকরা আরও জানান, উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে পাইকারদের মাধ্যমেই তা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। তবে হাজীগঞ্জের মিষ্টি কুমড়া সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় লাকসামের বাজারে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে এর বাজার আরও সমপ্রসারণ হবে।
এ ব্যাপারে কথা হয় হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার নয়নমনি সূত্রধর এর সাথে। তিনি বলেন, গত অর্থ বছরে হাজীগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়া চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ হেক্টর। চলতি অর্থ বছরে এ লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩শ' ২০ হেক্টর। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এখানকার চাষীরা দিন দিন মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বাড়াচ্ছে। ব্যাপক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ সবজিটি কৃষকদের জন্যে আরও লাভজনক করতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।
ফজর | ৪:৫৯ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
৪৬-সূরা আহ্কাফ সকল রাজনীতির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনকল্যাণ -আবুল ফজল।
স্বভাবে নম্রতা অর্জন কর। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |