চাঁদপুরে নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এবং জুলাই মাসের শুরুতে কয়েকদিন ধরে অতি বৃষ্টির কারণে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে আউশ ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফসলের মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। এভাবে ক্ষতি হলে এবং পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ না করলে আউশ ধান তো ঘরে উঠবেই না, আমন ধানের বীজ রোপণ করা সম্ভব হবে না। এদিকে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে। খালগুলো মানুষের দখলে চলে যাওয়া, কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনায় খালগুলো আবদ্ধ থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জলাবদ্ধতায় এ সেচ প্রকল্পটি কৃষকের জন্য অনেকটা অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার হানিরপাড়, কলাকান্দা, মিলারচর, মাথাভাঙ্গা, পাঁচআনী, নাউরী, হলদিয়া, লুধুয়া, একলাশপুর, জোড়খালী, শিকিরচর, ছেঙ্গারচর, কেশাইরকান্দি, জীবগাঁও, পাঠান বাজার, ঝিনাইয়া, মরাদন, ইসলামাবাদ, অলিপুর, নয়াকান্দি, সুজাতপুর ঠাকুরচর, রুহিতার পাড়, বদুরপুর, বাগানবাড়ি, নিশ্চিন্তপুর, দুর্গাপুর, লবাইরকান্দি, ইসলামাবাদ, ফতেপুরসহ প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলে কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে আমন ধানের বীজ তলা ও রোপা আউশ, বগি পাট, আখ, ফল ও কাঠ গাছের বাগান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মৎস্য খামার তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা ফসলি জমিতে আবাদ করতে পারছে না। কৃষকরা প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা না পাওয়ায় এ সেচ প্রকল্পকে তাদের জন্য অভিশাপ মনে করছেন। কলাকান্দা গ্রামের সাহেব আলী বলেন 'জানি না এহন আমরা কি করুম, হুদিনকালে পানি পাই না, বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জইম্মা সব ফসল তলাইয়া যায়। ফসল করতে গিয়া টাকা শেষ হইয়া যায়। ক্ষতির কারণে ফসল পাই না। এমনে আর কত দিন চলুম।' হানিরপাড় গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, 'প্রকল্পটি তৈরি হওয়ার পর থেকে আমরা বর্ষা আসলেই বৃষ্টির পানিতে ডুবে মরি। আমাদের চাষের জমি তলিয়ে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। পাউবো কর্তৃপক্ষকে এ জলাবদ্ধতার ব্যাপারে জানালেও এ পর্যন্ত কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয় নি।' দশানী-হানিরপাড়-বালুরচর-ছেঙ্গারচর বাজার হয়ে যে খালটি কালিপুর পাম্পহাউজে মিলেছে সে খালটির অবস্থা করুণ। মানুষের দখল, কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনায় খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এ খালটি দিয়ে পানি নিষ্কাশন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে দশানী, মাথাভাঙ্গা, হানিরপাড়, জোড়খালী, বালুরচর, মিলারচর এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর এ এলাকার কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিচু ভূমিতে বসবাসরত প্রায় ৪শ' বসতবাড়িতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচ-ী, বিষ্ণপুর, আশিকাটি, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর ও বালিয়া ইউনিয়েনের ফসলী জমির পাশে থাকা খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে অনেকে নিজ থেকেই জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ি থেকে রাস্তায় আসার জন্য সাঁকো দিয়েছেন। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানান, ড্রেজারের কারণে খাল-বিল ও ফসলি জমি ভরাট হয়ে গেছে। এখন আর পানি নিষ্কাশনের জায়গা নেই। যার কারণে আমাদের দুর্ভোগ চরমে।
এ বছর চাঁদপুর জেলায় আউশ ধানের চাষাবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৮শ' ৮৫ হেক্টর। তার মধ্যে মতলব উত্তর ৪ হাজার ৭৫ হেক্টর, মতলব দক্ষিণ ৫ হেক্টর, ফরিদগঞ্জ ৩শ' হেক্টর, শাহ্রাস্তি ৭শ' ৯০ হেক্টর, কচুয়া ৩ হাজার ৮শ' ৪০ হেক্টর, চাঁদপুর সদর ৩শ' ৭০ হেক্টর, হাইমচর ৫শ' ৫ হেক্টর। চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও মতলব দক্ষিণে নিচু এলাকা হওয়ায় আউশ ধানের চাষ কম হয়েছে এবং হাজীগঞ্জ সবচে নিচু এলাকা হওয়ায় আউশ ধানের চাষাবাদ হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপত্মর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-সহকারী কৃষি কমর্কতা আঃ মান্নান মিয়া,জানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আর পানি নিষ্কাশনের জন্য উপজেলাওয়ারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্প বিভাগ বেরি মেঘনা-ধনাগোদা ও এলাকায় পানি বেশি দেখা দিলে বা কম হলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ফজর | ৪:৫৯ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২৪-সূরা নূর হতাশা এবং অবিশ্বাস উভয়েই ভীতি দূর করে। -উইলিয়াম আলেকজান্ডার। মায়ের পদতলে সন্তানদের বেহেশত। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |