টমেটো একটি ক্ষুধাবর্ধক, তৃপ্তিদায়ক ফল ও সবজি। টমেটোতে রয়েছে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন 'এ' এবং ভিটামিন সি। টমেটো খেলে রক্তের লাল কণিকা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের ফ্যাকাশে ভাব ও রক্তস্বল্পতা দূর হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, শরীরের পুষ্টির জন্য যা যা দরকার লৌহ এবং অন্য ক্ষার টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। আপেল, কমলালেুব, আঙুর প্রভৃতি দামি ফলের চেয়ে টমেটোতে রক্ত তৈরির ক্ষমতা বেশি আছে। এতে লবণ, পটাশ, লোহা, চুন আর ম্যাঙ্গানিজ যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
টমেটোর আধুনিক জাত পরিচিত :
১. বারি টমেটোর-১ (মানিক) : গাছপ্রতি ফলন ২.৫০-৩.০ কেজি। চারা লাগানোর ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে ফল পাকতে শুরু করে এবং গাছ থেকে মাসাধিককাল ফল সংগ্রহ করা যায়। এ জাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে।
২. বারি টমেটোর-২ (রতন) : গাছপ্রতি ফলন ২.০-২.৫ কেজি। চারা লাগানোর ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে প্রথমবার এবং প্রায় ২০ দিন পর্যন্ত ২-৩ বার ফল সংগ্রহ করা যায়। এ জাতের ব্যাকটেরিয়াজনিত ঢলে পড়া রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে।
৩. বারি টমেটোর-৩ : ফলের রঙ গাঢ় লাল। প্রতি ফলের ওজন ৮০-৯০ গ্রাম। প্রতিটি গাছে ৩০-৩২টি ফল ধরে। গাছপ্রতি ফলন ২.০৩ কেজি। চারা লাগানোর ৮৫-৯০ দিনের মধ্যে ফল পাকতে শুরু করে। প্রতি গাছ থেকে ৭-৮ বার ফল সংগ্রহ করা যায়।
এছাড়াও রয়েছে বারি টমেটো-৪ ও বিনা টমেটো-৩ যা আগাম শীতকালীন সবজি হিসেবে চাষ করা যায়। বারি টমেটো-৫, টমেটো-৬ (চৈতী), বারি টমেটো-৭, বারি টমেটো-৮, বারি টমেটো-৯ ও বারি টমেটো-১০। হাইব্রিড টমেটোর জাত উদয়ন।
টমেটোর উৎপাদন প্রযুক্তি :
দোআশঁ ধরনের মাটি টমেটো চাষের জন্য উপযোগী। জমি ৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। সবার আগে বীজতলায় চার উৎপাদন করতে হয়। প্রথমে ঘন করে বীজ ফেলতে হয়ে। বীজ গজানোর ৮-১০ দিন পর গজানো চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করতে হয়। এত চারা সুস্থ ও সবল হয় এবং ফলন ভালো হয়। সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাস বীজতলায় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। বীজতলায় সমপরিমাণ বালি ও মাটি মিশিয়ে মিশ্রণটিকে ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হয়। প্রতি বীজতলায় (১০ফুট*৩ফুট) ১০ গ্রাম বীজ বোনা দরকার।
তৈরিকৃত মাটিতে বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর চারা রোপণের উপযোগী হয়। অর্থাৎ চারায় ৪-৫টি পাতা হলেও রোপণ করা যাবে। চারাগুলো ৩ ফুট প্রস্থ ও ১ ফুট উঁচু ভেলিতে দু'সারি করে লাগাতে হয়। এ ক্ষেত্রে সারি থেকে সারি ৬০ সে.মি. এবং চারা থেকে চারা ৪০ সে.মি. দূরত্ব রাখা দরকার। মধ্য কার্তিক থেকে মাঘের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চারা রোপণ করা যায়।
সার প্রয়োগ :
হেক্টরপ্রতি গোবর সার ১০ টন, ইউরিয়া ৫০০ কেজি, টিএসপি ৪০০ কেজি, এমপি সার ২০০ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। অর্ধেক গোবর সার ও টিএসপি সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে দিতে হয়। অবশিষ্ট গোবর সার চারা লাগানোর পূর্বে গর্তে প্রয়োগ করতে হয়। ইউরিয়া ও এমপি সার ২ কিস্তিতে পার্শ্বকুশি ছাঁটাই এর পর চারা লাগানোর তৃতীয় ও পঞ্চম সপ্তাহে রিং পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে হয়।
অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা :
প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি সার প্রয়োগের পূর্বে পার্শ্বকুশিসহ মরা পাতা ছাঁটাই করে দিতে হয়। এতে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয় এবং ফলের আকার বড় হয়। প্রবল বাতাসে টমেটো গাছ যাতে নুয়ে না পড়ে সে জন্য গাছে অ আকৃতির ঠেকানা দিতে হয়। টমেটো গাছের সুষ্ঠু বাড়-বাড়তির জন্য মাটির রস ধারণের ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনমতো ১৫ দিন পর পর সেচের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। টমেটোর জমি আগাছামুক্ত রাখতে হবে। উপরি সার প্রয়োগের সময় গাছের গোড়ায় মাটি উঠিয়ে দিতে হবে। পার্শ্ব থেকে বের হওয়া কুশী ভেঙ্গে দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে প্রতিটি গাছের গোড়ায় একটি শক্ত খুঁটি দিয়ে এ খুঁটির সঙ্গে ফুলের গোছার গোড়া বেঁধে দেয়া হয়। সাধারণত টমেটো গাছের প্রতিটির গিট থেকে ১ টি করে শাখা জন্ম নেয়। এশাখাগুলো ১ সে.মি. লম্বা হলেই কেটে ফেলতে হবে। একটি গাছে মাত্র ৪-৫ টি করে ফলের গোছা রাখতে হবে।
পোকামাকড় ও রোগবালাই :
টমেটো গাছে জাব পোকার আক্রমণ বেশি দেখা যায়। এ পোকা পাতা, কচি ডগা ও কা- থেকে রস শুষে খেয়ে গাছের বেশ ক্ষতি করে। জাব পোকা দমনের জন্য হলুদ কাপড় টানানো, হাত দিয়ে মেরে ফেলাসহ সঠিক কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। টমেটো গাছের ঢলে পড়া রোগ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এ রোগ হলেই গাছগুলো ঢলে পড়ে মরে যায়। রোগ জীবাণুগুলো গাছের রস চলাচলকারী নালিকাগুলো বন্ধ করে দেয় যার ফলে রস শিকড় থেকে কান্ডে চলাচল করতে পারে না। রোগাক্রান্ত টমেটো গাছ তুলে দূরে নিয়ে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
ফজর | ৪:৫৯ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২১-সূরা : আম্বিয়া শরীরের দুরন্ত অভিযানের সময় হচ্ছে যৌন, আর মনের অভিযান শুরু হয় বার্ধক্যের। মানবতার সেবায় যিনি নিজের জীবন নিঃশেষে বিলিয়ে দিতে পারেন, তিনিই মহামানব। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |