কৃষি বনায়ন : কৃষি বনায়ন এ শব্দ দুটি থেকে এটা পরিষ্কার যে, এখানে কৃষি পণ্য উৎপাদনের সাথে বনজ দ্রব্য উৎপাদনকে একীভূত করা হয়। অর্থাৎ কৃষি বনায়ন হচ্ছে 'একই ভূমি/ভূখন্ড থেকে কৃষি ফসল এবং বনজ দ্রব্য যুগপৎ কিংবা পর্যায়ক্রমিকভাবে উৎপাদন করা।' অন্য ভাষায় বৃহৎ বহু বর্ষজীবী কাষ্ঠল বৃক্ষের নিচে ও আশেপশে ক্ষুদ্রাকৃতির ফসল/উদ্ভিদ উৎপাদন করা অথবা ফসলি জমির আশেপাশে বা ভিতরে বহু বর্ষজীবী কাষ্ঠল বৃক্ষ উৎপাদন করার প্রযুক্তিই হচ্ছে কৃষি বনায়ন।
কৃষি বনায়নের উদ্দেশ্যে :
ক. সমন্বিত ও বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমির উৎপাদনশীলতাকে বাড়িয়ে দেয়া;
খ. বিভিন্ন ধরণের চাহিদা অনুযায়ী ফসল ও পশু-পাখি পালন করা;
গ. অধিক মুনাফা অর্জন করা;
ঘ. সর্বোপরি সম্পদভিত্তিক সংরক্ষণ করা;
ঙ. সুস্থ প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখা;
কৃষি বনায়নের উপকারিতা :
কৃষিজাত ফসলের সঙ্গে বৃক্ষের সমন্বয়ের ফলে বহুবিধ পরিবেশগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উপকারিতা লাভ করা যায়। নিম্নে এ সব উপকারিতা সমূহ তুলে ধরা হলো।
ক. পরিবেশগত উপকারিতা
১. বনাঞ্চলের উপর থেকে নির্ভরশীলতা হ্রাস, ফলে বনজ পরিবেশের অধিকতর সংরক্ষণ;
২. পরিবেশ ব্যবস্থার উন্নয়ন, যেমন : বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি, তাপমাত্রা হ্রাস, কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ, ভূ-গর্ভস্থ পানির উন্নয়ন;
৩. মাটিতে অবস্থিত অণুজীব সম্প্রদায়ের সংখ্যা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং তাদের মাধ্যমে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি ও পুষ্টি যেমন : নাইট্রোজেন এর যোগান দেয়া;
৪. মাটিতে জৈব পদার্থ যোগানের মাধ্যমে মাটির গুণাগুণ যেমন : মাটির গঠন, বুনট এসবের উন্নয়ন করা।
৫. ভূমির ক্ষয়রোধ এবং পুষ্টি উপাদানের চুয়ানো কমে যায়;
৬. ফসল, বৃক্ষ, পশুপাখি ও মাছ এসবের মাধ্যমে আন্তঃক্রিয়া বৃদ্ধির ফলে পরস্পর উপকৃত হয়;
খ. অর্থনৈতিক উপকারিতা
১. ভূমির বহুমুখী ব্যবহারে একক চাষাবাদ অপেক্ষা বেশি পরিমাণে উৎপাদন হয়;
২. একই ভূমি থেকে শস্য, শাক-সবজি, পশুখাদ্য, জৈব সার (সবুজ সারসহ), জ্বালানি কাঠ, কাঠ, মাছ, গোশত, ডিম এসব উৎপাদনের মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব;
গ. সামাজিক উপকারিতা
১. বেকারত্ব দূরীকরণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়।
২. খাদ্য সামগ্রী বহুমূখীকরণ এবং মান বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ পুষ্টি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়;
কৃষি বনায়নের উপাদান সমূহ :
কৃষি বনায়ন তিনটি প্রধান উপাদানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এ তিনটি উপাদান হচ্ছে :
১. বৃক্ষ ও অন্যান্য বহুবর্ষজীবী কাষ্ঠল উদ্ভিদ;
২. মৌসুমি অথবা একবর্ষজীবী কুষিজাত উদ্ভিদ/ফসল;
৩. পশু-পাখি ও গোশত;
এই তিনটি প্রধান উপাদানের সবকটি অথবা যে কোন দুইটি উপাদানের সংমিশ্রণে/সমন্বয়ে একটি কৃষি বনায়ন ধারা গড়ে উঠতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে যে, যে কোন কৃষি বনায়ন ধারার অত্যাবশকীয় উপাদান হচ্ছে বৃক্ষ বা বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ। আবার এ তিনটি উপাদানের মাধ্যমে পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক আন্তঃক্রিয়া ধনাত্মক হতে হবে এবং এদের একত্রে অবস্থানের ফলাফল অবশ্যই লাভজনক হতে হবে। তবে এ অন্তঃক্রিয়া কখনো কখনো ঋনাত্বকও হতে পারে। কাজেই এ সকল ভিন্নধর্মী উপাদান সমূহের সমন্বয় সাধনের জন্য তাদের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য, আবহাওয়া ও ভূ-প্রকৃতি এসব সম্পর্কে সম্যক ধারনা থাকতে হবে।
সামাজিক বনায়ন :
যে বনায়ন বা বন ব্যবস্থাপনায় জনসাধারণ সরাসরি জড়িত থাকে বা অংশগ্রহণ করে অর্থাৎ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে এবং জনগণ দ্বারা সৃষ্টি বনকে সামাজিক বনায়ন বা বন বলে।
সামাজিক বনায়ন যেমন : (১) কমিটি বনায়ন (২) গ্রামীণ বনায়ন (৩) অংশীদারিত্ব বনায়ন (৪) স্বনির্ভর বনায়ন পল্লী বনায়ন।
সামাজিক বনায়নের প্রয়োজনীয়তা :
ক. প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা, পরিবেশ দূষণ ও মরু প্রক্রিয়া থেকে দেশকে রক্ষা করা।
খ. ভূমির সুষ্ঠু ও উৎপাদনমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা।
গ. দেশের বিরাজমান গাছ ও জ্বালানি কাঠের ঘাটতি নিরূপন করা।
ঘ. গ্রামীণ ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের কাঁচামাল ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
ঙ. পতিত অনাবাদী ও প্রান্তিক জমির সদব্যবহার করা।
সামাজিক বনায়ন কোথায় কোথায় করা যেতে পারে :
সরকারি বনভূমি ব্যতীত বাংলাদেশে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের প্রচুর সুযোগ রয়েছে যেমন রাস্তার ধার, পতিত জমি, সড়কের ধার, প্রান্তিক জমি, নদী ও খালের পাড়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণ, বাঁধের পাড়, অফিস অঙ্গন, জলাশয় ও পুকুরপাড়, মসজিদের অঙ্গন, কাউন্সিলর রাস্তার ধার, গোরস্তান, কৃষি জমির আইল, উদ্যান, বসতবাড়ির আশেপাশে, শিল্প এলাকায়, শহরের প্রধান সড়কের পাশে, গো-চারণ ভূমি, বাণিজ্যিক এলাকা, উপকূলীয় এলাকা এসব।
ফজর | ৪:৫৮ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
২০-সূরা : তা-হা কোনো কবি তার কবিতার ভুবনে দরিদ্র রয় না। দাতার হাত ভিক্ষুকের হাত অপেক্ষা উত্তম। যে ব্যক্তি স্বাবলম্বী ও তৃপ্ত হতে চায়, আল্লাহ তাকে স্বাবলম্বন ও তৃপ্তি দান করেন। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |