স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনাদর্শ বুকে ধারণ করে প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে ২০০৫ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু আদর্শ ফোরাম কাজ করে যাচ্ছে। গবেষণামূলক, ঐতিহাসিক এবং বৈচিত্র্যময় কার্যক্রমের মাধ্যমে সংগঠনটির দেড় দশক অতিক্রম হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু আদর্শ ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি লোক-গবেষক শামসুজ্জামান খান-এর প্রয়াণে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাদল চৌধুরী; যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুন নিসা; সভাপতিম-লীর সদস্যÑঅধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, কবি অসীম সাহা, নাট্যব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মঞ্চসারথী আতাউর রহমান ১৯৪১ খ্রীস্টাব্দে নোয়াখালী নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। সংস্কৃতিমনা পরিবারে বেড়ে ওঠার কারণে স্কুল থেকেই সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। রবী ঠাকুরের ‘নটীর পূজা’ নাটক দর্শনে প্রথম মঞ্চপাঠ শুরু তাঁর আর জুলভার্নের ‘টুয়েন্টি থাউজেন্ডস লিগস আন্ডার দ্য সি’ পাঠের মধ্য দিয়ে শিল্পজগতে প্রবেশ। ৬৮তে যখন বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে জিয়া হায়দারের অনুপ্রেরণাতে নাটকের দল করেন, নাম হয়Ñ‘নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়’। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ‘নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়’ থেকে ‘বুড় শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকটি নির্দেশনার মধ্য দিয়ে নাট্য নির্দেশনা শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে বাংলার মঞ্চে আতাউর রহমানের পদচারণা। নিজ দল এবং নিজ দলের বাইরে উল্লেখযোগ্য নির্দেশনায় আজ অবধি তার নির্দেশিত নাটকের সংখ্যা ত্রিশের কোটা পেরিয়েছে। মঞ্চ নাটকের নির্দেশনার পাশাপাশি তিনি অভিনয়ও করেছেন সমানতালে। একাধারে মঞ্চ, রেডিও ও টেলিভিশনে সমান পদচারণা তাঁর। সেইসঙ্গে নাট্য বিষয়ক পুস্তক রচনা, নাট্যসমালোচনা, উপস্থাপনা, নাট্য শিক্ষক হিসেবে পাঠদান, টেলিভিশন নাট্যকার, প্রবন্ধকার, একজন সুবক্তাÑএমন সব ক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর সরব পদচারণা; মূলত সব ক্ষেত্রেই নিজের উজ্জ্বলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন তিনি। নবনাট্য আন্দোলন, গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনসহ দেশের সকল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে রয়েছে তাঁর অসামান্য অবদান। স্বীকৃতিস্বরূপ অর্জন করেছেন অসংখ্য পুরস্কার, ২০০১ সালে নাট্যক্ষেত্রে অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ২১ পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে আতাউর রহমান এক কন্যা এবং এক পুত্র সন্তানের জনক।
একান্ত ভালোবাসা থেকেই দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি অসীম ভালোবাসার দায় থেকেই তিনি ছুটে চলেছেন। তাঁর এ পথ চলা বঙ্গবন্ধু আদর্শ ফোরাম-এর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে এই প্রত্যাশা সকলের।