চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে শিক্ষার পাঠ চুকাবার পর নিজ এলাকাবাসীর জন্যে কিছু একটা করবেন এমন ভাবনা তার। কিন্তু কী করবেন এলাকাবাসীর জন্যে এটা নিয়ে ছিলো হতাশা। আর কোন্ পথে রোজগার করলে নিজে ও এলাকাবাসী উপকৃত হবে-এমন আয়ের পথ খুঁজতে থাকেন। এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ মিলে নিজ মহল্লার মসজিদের ইমামের সাথে। তিনি তাকে গরুর ফার্ম করার পরামর্শ দেন। সেখান থেকে স্বপ্ন দেখা। আজ সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্ম নামে। এ ফার্ম থেকে স্থানীয়রা তাদের চাহিদা অনুযায়ী দুধ নিয়ে থাকেন। দুধ বেচা-বিক্রিতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না তার। নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া-সকাল ৮টা থেকে ৯টা, বিকেল ৫টা থেকে ৬টা। এর মধ্যেই দূর-দূরান্ত থেকে অগত লোকেরা দুধ নিয়ে যান। আর বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে না আসলে দুধ পাওয়া যায় না। সারিবদ্ধ বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে দুধ নিতে দেখা গেছে মানুষজনকে।
এ অদম্য পরিশ্রমী ও সাহসী ব্যক্তির নাম মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব। বয়স ২৫ পেরিয়েছে অনেক আগেই। বাড়ি চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া মহল্লায়। এ খামার থেকে মাসে তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে ২০ হাজার টাকা আয় করেন। তার উদ্দেশ্য নিজ এলাকার মানুষকে বিশুদ্ধ খাঁটি দুধ খাওয়ানো। মানুষও তাদের চাহিদা মতো প্রতিদিন দুধ নিয়ে যান।
কোড়ালিয়ার পীর বাদশা মিয়া রোডস্থ সাজ্জাদ দেওয়ান বলেন, আমি প্রায় ৩ বছর হলো এখান থেকে দুধ নিই। কখনো দুধে ভেজাল দেখিনি। আগে বাজার থেকে কিনতাম, দুধের মধ্যে ভেজাল পেতাম। আখলিমা বেগম বলেন, বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্মের দুধ ভালো। তারা প্যাকেট করে দুধ বিক্রি করে। সে সুবাদে আমাদের দুধের জন্যে পাত্র (কোনো বোতল) আনতে হয় না। সিয়াম খান বলেন, এখানে দিনে দুবার দুধ বিক্রি করা হয়। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসে দুধ নিয়ে যাই।
বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিবের সাথে খামার শুরু করার বিষয়ে নিয়ে কথা হয় কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদকের। তিনি জানান, পড়াশোনা শেষ করে চাকুরি করবো এমনটাই আশা ছিলো। কী করবো সেটা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়লাম। এরই মাঝে আমাদের কোড়ালিয়া জামে নূর মসজিদের (সাবেক) ইমাম মাওঃ মুহাম্মদ আবদুর রহমান গাজীর সাথে কথা হয়। তিনি আমাকে একটি গরুর ফার্ম করার পরামর্শ দেন। যার মাধ্যমে আমার ও এলাকাবাসীর উপকার হবে। পরে তিনি একদিন আমাকে তাঁর ডেইরি ফার্মে নিয়ে যান। তাঁর ফার্ম দেখে আমি এমন কিছু করবো স্বপ্ন দেখেছিলাম।
হাবিবুর রহমান জানান, ২০০৯ সাল থেকে শুরু করি ৩টি ষাঁড় গরু দিয়ে। পরে ২টি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী দিয়ে খামার শুরু করি। এর মধ্যে প্রায় ৪ শতাংশ জমি ভরাট করে গাভীর শেড নির্মাণ করি। প্রথমে শুরু করি গরু মোটাতাজাকরণ। আর ওই গরুগুলো কোরবানি ঈদে বিক্রি করতাম।
শুরুটা একদমই ভালো ছিলো না। অনেক কষ্ট পেরিয়ে আজকের এ শক্তিশালী অবস্থানে এসেছেন হাবিব। ২০০৯ সালে নিজ বাড়ি চাঁদপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডস্থ কোড়ালিয়ায় নিজে গরু পালন শুরু করেন। ছোট্ট আকারে গাভীর খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু মূলধনের অভাবে কয়েক বছর পর সেই খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা দেখা দেয়। পরে তার নিকটতমদের সহায়তায় পুনরায় বিসমিল্লাহ ডেইরি ফার্ম নামে শুরু করেন।
এ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তার ব্যবসার খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানালেন। বর্তমানে তার ১০টি গাভী ও ১০টি বাছুর রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি গাভী দুধ দেয়। দৈনিক ১১২ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। স্থানীয়রা প্রতি লিটার দুধ ৭০ টাকা করে কিনে নেয়। এ হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজার ৪০০ টাকার দুধ বিক্রি করেন। দৈনিক গাভীর খাদ্য ও মজুরির জন্যে ৭ হাজার ৭০০ টাকা ব্যয় হয়। দৈনিক দুধ বিক্রি করে আয় হয় ৭০০ টাকা। মাসিক ২১ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। দৈনিক উৎপাদিত দুধ স্থানীয়রা ফার্ম থেকে কিনে নেন। এছাড়া প্রতি বছর একটি করে বাছুর বিক্রি করা হয়। এ থেকে বার্ষিক ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আবদুল মোতালেবের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সমন্বিত ডেইরি খামার প্রতিষ্ঠায় হাবিবুর রহমান বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। প্রতিদিন তাকে নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা এবং বাস্তবায়ন করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তার খামারের গোবর নিয়ে জৈব সার তৈরি করে স্থানীয়রা কৃষি জমিতে ব্যবহার করছেন। এছাড়া তিনজন শ্রমিক এ ফার্মে চাকুরি করছেন। এতে তাদের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শ নিয়ে বড় আকারে সমন্বিত ডেইরি খামার গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
ফজর | ৪:৫৯ |
যোহর | ১১:৪৫ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৫ |
এশা | ৬:৩১ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
৪৮-সূরা ফাত্হ্
assets/data_files/web
আত্মার সৌন্দর্য মানুষকে পরিপূর্ণতা দান করে। _টমাস ফুলার।
যে ব্যক্তি প্রথম সালাম দেয়, সে অহঙ্কার মুক্ত।
|
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |