চাঁদপুর সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সবজি চাষে এ বছর কৃষকরা পিছিয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতার কারণেই আগাম সবজি চাষ করতে পারছেনা বলে কৃষকের দাবি। কৃষকরা বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণ, ফসলি জমি ও খাল ভরাট করে ফেলায় বর্ষার ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে আমরা আগাম সবজি চাষ থেকে পিছিয়ে পড়েছি। এতে করে আমাদের অনেক লোকসান গুণতে হচ্ছে।
বর্ষা মৌসুমে চাঁদপুরের বিভিন্ন কৃষি জমি ও খাল-বিল পানির নিচে চলে যায়। এ সময় কৃষক-কৃষাণীর কাজ থাকে কম। চাঁদপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনেরর প্রভাব মোকাবেলায় ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করে ছিলো গত বছর । এ বছর এ প্রকল্প না থাকায় কৃষকরা আরও পিছিয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকরা কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান স্তূপ তৈরি করে সবজি ও মসলা চাষ করে বিকল্প আয়ের সংস্থান করতেন। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সহযোগিতা কৃষকরা না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চাষাবাদের সঙ্গে কৃষকরা নিজেদের খাপ খাইয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। ভসমান বেডের সবজিতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। বাজারে সুস্বাদু ও নিরাপদ এ সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এজন্যই কৃষকরা এ সবজির বেশি দাম পেয়ে লাভবান হতেন। কিন্ত এবছর অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ায় চাঁদপুরে জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা আগাম সবজি চাষে পিছিয়ে রয়েছেন।
শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের বিমলেরগাঁওয়ের কৃষক ও ইউপি সদস্য মাহমুদ সেলিম বকাউল বলেন, আমি ১৪টি ভাসমান স্তূপ তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছি। একটি বেডেই কয়েকটি ধরনের সবজি চাষ করেছি। এতে আমার পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে বাজারেও বিক্রি করেছি। এর আগে আমরা এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতাম না। আমাদের এলাকায় সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করে। আমরা এ প্রকল্পের আওতায় চাঁদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কচুরিপানা স্তূপে চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছি। মাটিবিহীন এসব চাষাবাদ দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বিমলেরগাঁও গ্রামে ছুটে আসে।
রামপুর ইউনিয়নের কৃষক লোকমান মিয়া বলেন, এক শতক পরিমাণ স্তূপ তৈরি করতে আমাদের প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। আর আয় হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা। খরচ বাদে প্রতি শতক স্তূপ থেকে লাভ থাকে ৪ হাজার টাকা। ভাসমান স্তূপে সবজি উৎপাদন শেষে ওই স্তূপে জমিতে ছড়িয়ে দিয়ে আমরা জৈবসার হিসেবে ব্যবহার করি। শীত মৌসুমে স্তূপে বিনা চাষে ও রাসায়নিকমুক্ত সবজি উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছি।
হামানকদ্দি গ্রামের কৃষক দেববনাথ বিশ্বাস বলেন, ভাসমান সবজি চাষ আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই আধুনিক পদ্ধতিতে স্তূপে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছি। বাজারে এ সবজির চাহিদা ও দাম বেশি। বেশি দামে সবজি বিক্রি করে আমরা লাভবান হচ্ছি।
মৈশাদী ইউনিয়নের হমানকর্দ্দি বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বাবু খোকন চক্রবতী বলেন, আমি এ বস্নকে অনেক বছরই কাজ করছি। এলাকায় প্রতি বছরই সবজি চাষ হয়। কয়েক বছরই বছরই ভাসমান স্তূপে সবজি চাষ হচ্ছে। আমার বস্নকের কৃষকরা খুবই কর্মঠ। কৃষি বিভাগের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আধুনিক ভাসবান চাষাবাদের দিকে ঝুঁকেছে। এখানে বর্ষার সময় ৩-৪ ফুট পানি থাকে। কৃষকরা মাটির স্তূপ উচু করে শাক সবজি উৎপাদন করে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার দিল আতিয়া পারভীন বলেন, চাঁদপুরে ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন একটি বড় ধরনের সমস্যা। এ সমস্য সমাধানে সকলের আন্তরিকতা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান সবজি চাষ একটি চমৎকার সমাধান। চাঁদপুরে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তা বাড়িয়ে সবজি ও মসলার উৎপাদন প্রায় ৫-৬ গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ সবজির আবাদ সম্প্রসারিত করা হলে বর্ষাকালে সবজির মোকাবেলা করা সম্ভব। খরিফ-২ এর আওতায় ২০০ হেক্টরের মতো ভাসমান স্তূপে সবজি ও মসলা চাষ করা হয়েছে। এখানে কৃষকরা ভাসমান স্তূপ তৈরি করে ঢেঁড়স, গিমাকলমি, পুঁইশাক, বরবটি, শসা, করলা, বাঙ্গি, হলুদ, লালশাক, ডাঁটাশাক ইত্যাদি ফসল আবাদ করেছেন। গত বছর জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের আওতায় তারা শুরু করে
সফলতা দেখিয়েছে এবং সবজি উৎপাদনে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত করেছে। তাদের দেখাদেখি অন্যরা এগিয়ে আসছে। এ বছর জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের প্রকল্প না থাকলেও অনেক কৃষকরা নিজ উদ্যোগে ভাসমান সবজি চাষ করছে।
ফজর | ৫:০৬ |
যোহর | ১১:৪৯ |
আসর | ৩:৩৬ |
মাগরিব | ৫:১৪ |
এশা | ৬:৩২ |
হেরার আলো
|
বাণী চিরন্তন
|
আল-হাদিস
|
৩০-সূরা রূম
শিক্ষার মূল লক্ষ্য জ্ঞান নয়, কর্ম। অতিরিক্ত উপাসনার চেয়ে অতিরিক্ত বিদ্যা শ্রেয়। |
করোনা পরিস্থিতি | ||
বাংলাদেশ | বিশ্ব | |
আক্রান্ত | ৭,৫১,৬৫৯ | ১৬,৮০,১৩,৪১৫ |
সুস্থ | ৭,৩২,৮১০ | ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮ |
মৃত্যু | ১২,৪৪১ | ৩৪,৮৮,২৩৭ |
দেশ | ২০০ ২১৩ | |
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। |
হ্যাঁ | না | মতামত নেই |