চাঁদপুর, রবিবার ২৩ আগস্ট ২০১৫ | ৮ ভাদ্র ১৪২২ | ৭ জিলকদ ১৪৩৬
jibon dip

সর্বশেষ খবর :

  • -
ফলদ বৃক্ষের সাথে মিশে আছে আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি
মু. আবদুল লতিফ ছিদ্দিকী
২৩ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০:০০
প্রিন্টঅ-অ+


অপার সম্ভাবনার দেশ আমার এ বাংলাদেশ। তাই তো কবি গেয়েছেন



অনেক দামের দেশ, রক্ত ঘামের দেশ,



মায়ার বাঁধন বড় বেশি----



ধন্য ধন্য আমি সবার চাইতে দামী



বাংলা মায়ের সন্তান। দামী মাতৃভূমির দামী



সন্তান হিসেবে আমাদের সবার রয়েছে দেশ মাতৃকার প্রতি কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমার আপনার প্রাণের চেয়ে প্রিয়তমা মাতৃভূমি আজ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন। যেই দেশে রয়েছে কয়লা খনি, প্রাকৃতিক গ্যাস, চুনা পাথর, চীনা মাটি, শ্বেতমৃত্তিকা, সিলিকা বালির মতো সমৃদ্ধ খনিজ সম্পদ।



আরো আশার কথা, আমাদের দেশের কয়লা খনিতে হীরক পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভবনা হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলায় সোনার খনি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহেশখালি থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগরের তলদেশ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তেল পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। নোয়াখালীতে পাওয়া গেছে নতুন গ্যাস কূপ। আর আমাদের পৃথিবী বিখ্যাত সমুদ্র সৈকতের বালুকা রাশিতে ইলেকট্রনিক পরমাণু পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এই দামী পদার্থটি আবিষ্কৃত হলে আমাদের আপার সম্ভাবনার দ্বার আরও উপযুক্ত হবে।



আমাদের সবচেয়ে দামী সম্পদ হচ্ছে আমাদের সোনাফলা মাটি। যা পৃথিবীর অনেক দেশেই নেই। শুধু একটু উদ্যোগের অভাবে আমরা পিছিয়ে আছি কৃষির বিভিন্ন্ শাখায়।



এবার ফলদ বৃক্ষ মেলা ২০১৫ নিয়ে কিছু কথা ও কবিতা। মানব জাতি এ পৃথিবী প্রেরণের/ আবির্ভূত হওয়ার পেছনের রহস্য হচ্ছে ফল। ফল পছন্দ করে না এমন মানুষ পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না। আর আমাদের দেশীয় ফলের রয়েছে বৈচিত্র্যময়ী স্বাদ, ঘ্রাণ আর বাহারী রং। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমরা আমাদের খাবার টেবিল সাজিয়ে রাখি বাহারী বিদেশী ফল দিয়ে। আমাদের বাড়ির আনাচে কানাচে অযত্নে অবহেলায় জন্মনো ফলগুলোর স্বাদ, পুষ্টিমান, রং অনেক বিদেশী ফলকে হার মানায়। এই ফল ও ফল গাছের সাথে মিশে আছে আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি। আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি, আবহাওয়া, জলবায়ু, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নয়নে নিজেদের এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমাদের দেশী ফল ও বৃক্ষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য কবিতায় উল্লেখ করা হলো।



পেঁপে, কলা, বিচি কলা, পেয়ারা, লেবু, কদবেল, আম, কাঁঠাল, লিচু, কুল বাউ কুল আছে নারকেল। কামরাঙ্গা, ডালিম, সফেদা, আনারস, জলপাই, আমড়া, লটকন, আমলকি, তাল, গাব, বিলাতী গাব ও সাতকরা।



খুদিজাম, গোলাপ জাম, তৈকর, কাউ, পানি ফল, আশ ফল, কাগজিলেবু, কমলা, জাম, কাঠ বাদাম সাথে করে নিয়ে যেও কিছু জামরুল।



আপেল কুল, বেল, আতা, শরিফা, চালতা, খেজুর, তেতুল, ডেউয়া, করমচা, অরবরই, আনাজি কলা, বনের জগডুমুর।



ফলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ফুল, পাখি, পাখির সঙ্গে গান গানের সাথে সুর, কবিতা, চলচ্চিত্র। তাইতো নৈঃস্বর্গিক কবি জীবনানন্দ দাস লিখেছেন।



বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজতে যাই না আর, অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে।



চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নীচে বসে আছে। জাম, বট, কাঁঠালের, হিজলের, অশ্বথের করে আছে চুপ, এমনই হিজল, বট, তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রপ।



আমরা অনেক সময় তর্ক করি ডিম আগে না মুরগি আগে? ঠিক তেমনভাবে একই কথা ফল ও গাছের বেলায় ঃ ফল আগে না গাছ আগে? আমরা আপাতত সেই বিতর্কে না গিয়ে আপরিমিতভাবে গাছ-পালা কেটে আমাদের পরিবেশের কী বিপর্যয় ঘটিয়েছি তার আর্তনাদ কি আমরা শুনছি?



I remember, I remember The house where I was born The little window where the sun came peeling in at room.



সুতরাং আমরা বলতে পারি 'জীবন হচ্ছে মুহূর্ত দিয়ে মুহূর্ত মুছে ফেলে এগিয়ে চলা।' আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া বন-বাদর, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাওড়-বাঁওড়ে কী দেখতে পাই? বুনো ঘাস, গুল্ম লতায় হিজল তমালের ঝরা ফুল, নুনতা, কাউ ফুল, ডেওয়া বইচি বনে ফেলে এসেছি রঙ্গিন শৈশব আনমনে কোনো এক কাশ বনে। হারিয়ে ফেলেছি আম, জাম, জামরুল, তাল, তমাল, সুপারি বন স্বেচ্ছাচারী সার কীটনাশক ও শিল্প বর্জ্য দিয়ে।



রাত জাগা চোখ, জোনাকীর আলো, শ্রাবণের ভেজা বাতাসে কদম ফুলের ঘ্রাণ। সবকিছু সুন্দর বনের মৃগীর মত, পলাতক জীবন নদীর সময়ের স্রোতে, আমি কি পথ ভোলা যাযাবর? নাকি আত্ম ভোলা এক পথিক? বার বার খুঁজে ফিরি জীবনের রঙ্গিন জোয়ারে ভাসানো ভেলা দু' চোখ আড়ষ্ট হয়ে আসে অতীতের নৈঃসর্গিক স্মৃতি। ফিরে পাবো কি? প্রকৃতির রঙ্গিন ফুল, পাখি, গাছ গাছালি বন। স্মৃতির শিশির ভেজা এইসব দিন রাত্রি।



যদি এখন আমাদের দেশে অপরিকল্পিতভাবে লাগানো হচ্ছে গাছ যার ৯০% হচ্ছে কড়ই। যা আমাদের উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হচ্ছে। আমাদের বসত বাড়ির আঙ্গিনার ফল গাছের জায়গাটি দখল করে আছে উক্ত গাছটি।



আমরা জানি বিদ্যুৎ হচ্ছে শহরের অলঙ্কার। গাছ গাছালি হচ্ছে গাঁয়ের অলঙ্কার। আর বনের সৌন্দর্য হচ্ছে গাছ, ফুল, পাখি আর বন্য প্রাণী। যার উপমা জীবনানন্দের কবিতায় উল্লেখ করা হলো যেখানে মানুষ কেউ যায় নাকো-দেখা যায় বাঘিনীর ডোরা বেতের বনের ফাঁকে জারুল গাছের তলে রৌদ্র পোহায়



রূপসী মৃগীর মুখ দেখা যায়।'



আর আমরা পত্রিকার পাতায় চোখ রাখলেই দেখতে পাই বনো খেকো মানুষের কারণে বাঘিনীরা হারিয়ে ফেলেছে খাদ্য ও নিরাপদ আশ্রয় স্থল। তাই বাঘিনীরা জঙ্গলে ফেলে লোকালয়ে এসে হত্যা করছে আদম সন্তান। বাঘ/বাঘিনীরা এর চেয়ে বড় শিক্ষা আর কী দিতে পারে আদম সন্তানকে? বলতে ইচ্ছে করে কী?



আমাদের অনাগত প্রজন্মের জন্যে একটি আবাসযোগ্য বাসভূমি রেখে যাওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে কিশোর কবি সুকান্তের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে ইচ্ছে করে-



এসেছে নতুন শিশু তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান ;



জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ পিঠে চলে যেতে হবে আমাদের।



চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ।



প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল, এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি- নবজাতকের কাছে আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।



কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ফসল বৃক্ষ মেলা '১৫ সার্থকতা পাবে আপনি এবং আপনার সবান্ধব উপস্থিতি এবং আমরা আপনারা প্রত্যেকে যদি একটি গাছের চারা রোপণ করি। 'শপথ করি সবাই মিলে চারা রোপণের যত্ন করে চারিদিকে দিয়ে দিবো ঘের রবি ঠাকুরের একটি কবিতা দিয়ে শেষ করছি- একদিন সখী হারাবে খানি তুচ্ছ জীবন নদী তার আগে ক্ষতি কি বল উৎসব করি যদি শ্রাবনের ঝরা উপেক্ষা করে নিশ্চয়ই মেলা প্রাঙ্গণ আপনাদের পদচারণায় তিল ঠাঁই হবে না নিশ্চয়ই। তাহলে আষাঢ়ের মেঘে ভেজা আমাদের এই শ্রম পণ্ড শ্রম হবে না।



লেখক পরিচিতি : উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর।


হেরার আলো
বাণী চিরন্তন
আল-হাদিস

২-সূরা বাকারা


২৮৬ আয়াত, ৪০ রুকু, মাদানী


পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।


৭৯। সুতরাং দুর্ভোগ তাহাদের জন্য যাহারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং তুচ্ছ মূল্য প্রাপ্তির জন্য বলে, 'ইহা আল্লাহর নিকট হইতে।' তাহাদের হাত যাহা রচনা করিয়াছে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের এবং যাহা তাহারা উপার্জন করে তাহার জন্য শাস্তি তাহাদের।


 


 


 


assets/data_files/web

আত্মার সৌন্দর্য মানুষকে পরিপূর্ণতা দান করে। _টমাস ফুলার।


 


 


যে ব্যক্তি প্রথম সালাম দেয়, সে অহঙ্কার মুক্ত।


 


 


ফটো গ্যালারি
করোনা পরিস্থিতি
বাংলাদেশ বিশ্ব
আক্রান্ত ৭,৫১,৬৫৯ ১৬,৮০,১৩,৪১৫
সুস্থ ৭,৩২,৮১০ ১৪,৯৩,৫৬,৭৪৮
মৃত্যু ১২,৪৪১ ৩৪,৮৮,২৩৭
দেশ ২০০ ২১৩
সূত্র: আইইডিসিআর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
আজকের পাঠকসংখ্যা
২৯১৪৮৫৯৮
পুরোন সংখ্যা